ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বাকৃবিতে হবে ২ ছাত্রী হল, ব্যয় ১০২ কোটি টাকা

আতিকুর রহমান, বাকৃবি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৮, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১  
বাকৃবিতে হবে ২ ছাত্রী হল, ব্যয় ১০২ কোটি টাকা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি হলের মধ্যে মেয়েদের হলের সংখ্যা চার। শুরুতে ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্রসংখ্যা অনেক বেশি ছিল কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তুলনামূলকভাবে ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় হলগুলোতে আবাসন-সংকট লেগে আছে। এ কারণে আবাসন সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাকৃবিতে ৪ বছর মেয়াদী ‘অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের’ কাজ শুরু হয়েছে যেখানে ছাত্রীদের জন্য নতুন দুটি ১০তলা ভবনবিশিষ্ট হল তৈরির প্রস্তাবনা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) পেছনে হলগুলো তৈরি হবে, যার ব্যয় হবে ১০২ কোটি টাকা। প্রত্যেক হলের ধারণক্ষমতা হবে ১২০০ শিক্ষার্থী। হলগুলোর নির্মাণ কাজ সংসদীয় কমিটিতে পাস হলেই টেন্ডারের মাধ্যমে শুরু হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৪৩ শতাংশ ছাত্রী, যার বিপরীতে হলগুলোতে সীমিত আসন সংখ্যা রয়েছে। ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে এখন পর্যন্ত বেগম রোকেয়া হলের উত্তর দিকে হল সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং সুলতানা রাজিয়া হলের একটি ব্লকে নতুন উইং তৈরি করা হয়েছে। এর আগে নতুন ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ারের উপরে আরও দুইতলা নির্মাণ করা হয়েছে।

অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পটির মোট বাজেট ৬৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গত ৩০ জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের আওতায় মোট ব্যয় হয়েছে ৫০ কোটি ৫৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ। করোনা সংক্রমণের কারণে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি আনেকটাই কমে গেছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও  জানান, এ পর্যন্ত ৫০ কোটি ৫৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে। যার মধ্যে হল মেরামতে ১৬ কোটি ৬৮ লাখ, হল সম্প্রসারণে (বেগম রোকেয়া হল)  ৯ কোটি ৩ লাখ ৪৮ হাজার, হলের নতুন উইং তৈরিতে (সুলতানা রাজিয়া হল) ২ কোটি ৬৯ লাখ ৮৯ হাজার, অভ্যন্তরীণ রাস্তা এবং কালভার্ট তৈরিতে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪৭ হাজার, ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৭০ হাজার, পানি সরবরাহ লাইনে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার, হাই টেনশন ইলেকট্রিক লাইনে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৯৭ হাজার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার দেওয়াল তৈরিতে ১ কোটি ২২ লাখ ৩৫ হাজার, হলের সীমানা দেওয়াল তৈরিতে ৪ কোটি ৬০ লাখ ৭২ হাজার, ৪ টি বাস, ২ টি মাইক্রোবাস, ১টি পিকআপ এবং ১ অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়বাবদ ব্যয় ৩ কোটি ১৪ লাখ ৪৬ হাজার, ট্রান্সফরমার ক্রয়বাবদ খরচ ৭১ লাখ ৮৫ হাজার, আবাসিক হলের নতুন আসবাবপত্র তৈরি বাবদ ব্যয় ১ কোটি ৪২ লাখ ৬২ হাজার, সেন্ট্রাল ল্যাব যন্ত্র (যেমন-ডিএনএ সিকুয়েন্সার) ক্রয় বাবদ খরচ ৩ কোটি ৯৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

এছাড়া তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে আরও প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। যার মধ্যে স্টুডিও ভবন (শিক্ষকদের আবাসিক ভবন), ৮ তলা মাল্টি পারপাজ ভবন, উচ্চ গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট, ২ তলা বিশিষ্ট ৮ টি ফিল্ড ল্যাব এবং ফার্ম ইকুইপমেন্ট ক্রয় প্রক্রিয়াধীন। অন্যদিকে শহীদ জামাল হোসেন হলকে ১০ তালা ভবনে রূপান্তর করা হবে। যার ধারণক্ষমতা হবে ১২০০ জন। এছাড়া শিক্ষদের জন্যে ২টি ১০ তলা ভবন (আবাসিক), অফিসারদের জন্যে ১টি এবং কর্মচারীদের জন্যে ১টি ১০ তলা ভবন এবং ৬ তলা ভবন বিশিষ্ট টিএসসি নির্মাণ করা হবে। 

উল্লেখ্য, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে আগামী অর্থ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প শুরু হবে। এ বাজেটে একটি বিশ্ব মানের ১০ তলা ভবন বিশিষ্ট ল্যাব তৈরি করা হবে, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা। এছাড়া এ বাজেট থেকে পুরাতন একাডেমিক ভবন সংস্করণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের বিদেশে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা এবং গবেষণামূলক কাজে ব্যয় করা হবে।

ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‌‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নত অবকাঠামো এবং অত্যাধুনিক ল্যাব সুবিধা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আধুনিক শিক্ষার মানসহ গবেষণার মান বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন নতুন উন্নত গবেষণা করার ক্ষেত্র তৈরি হবে। এতে করে বাকৃবি বিশ্ব সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করছি।’ 

/মাহি/ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়