ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

২ মাস পর জানা গেল রাবির প্রথম শহিদের পরিচয়

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১২, ১৬ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ১৫:৪৭, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
২ মাস পর জানা গেল রাবির প্রথম শহিদের পরিচয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) একজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের চূড়ান্ত পতনের দিন নিজ এলাকায় তার মৃত্যু হয়।

গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাবির ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক ফেসবুকে এ বিষয়টি নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। তবে রাবির সমন্বয়কদের মধ্যে কেউ এ বিষয়ে জানতেন না বলে জানা গেছে।

নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম জহিরুল ইসলাম। তিনি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাসা গাজিপুরের কাপাশিয়া থানার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামে। তার বাবা তাজুল ইসলাম ও মা শাহনাজ পারভীন। তিনভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম জহিরুলের মৃত্যুর বিষয়ে ফেসবুকে লেখেন, ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে, সে সংবাদটি কেউ জানালো না এতদিন? জহিরুল ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, রোল ১৯১০৩৩৪১৫২, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিল সে। বিস্তারিত জানা থাকলে কেউ সাড়া দিন।’

পোস্ট করলে মৃত্যুর বিষয়টি সবার সামনে আসলেও ওই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামসুল আরেফিন জানান, এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি গত ২৯ সেপ্টেম্বর ছাত্র উপদেষ্টা অফিসকে অবগত করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, দরখাস্ত আহ্বানের পর আমরা লিখিতভাবে ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠির মাধ্যমে বিষয়টা অবগত করি। আমরা দোয়া মাহফিলের আয়োজনও করেছিলাম।

এই বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রাশেদ রাজন বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না। বিভাগ থেকে যে কোনো আয়োজন করা হয়েছে, এ বিষয়েও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এটা নিয়ে এতদিন কেউ আমাদের কোনো কথাই বলেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম বলেন, কয়েকদফা নিজের ফেসবুক টাইমলাইন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের তথ্য চাই। বেশ কয়েকজনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আবেদন করতে বলি। কিন্তু জহিরুলের তথ্য কেউ মৌখিক বা লিখিতভাবে কেউ দেয়নি। সবশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করি এবং সেটা সবগুলো বিভাগ ও হলে তথ্যের জন্য প্রেরণ করি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের এক মাস পূর্ণ হওয়ায় আজ ফাইলটি অফিস থেকে চেয়ে আবেদন ও তথ্য প্রদানকারীর তালিকা তৈরি করতে নির্দেশনা দেই।

অফিসিয়াল প্রসেসিংয়ের কারণে দেরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন করে আর কোনো আবেদন জমা না হওয়ায় মূলত আমরা গত সোমবার ফাইলগুলো নিয়ে কাজ শুরু করি। এ সময় জহিরুল ইসলামের ফাইলটি সামনে আসে। আমরা যখন দরখাস্ত আহ্বান করি তখন লিখিতভাবে চিঠির মাধ্যমে তারা বিষয়টি অবগত করেছিলেন। তবে মৌখিকভাবে আমাকে বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাউকে জানানো হয়নি। ফলে আমরা এতদিন অবগত ছিলাম না।

জহিরুলের পরিবারকে সাহায্য করার বিষয় তিনি বলেন, আমরা তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার পরিবারকে যথাসম্ভব আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবে।

এদিকে তার বড়ভাই মো. জাহিদ হাসানের ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরেই বেশকিছু  দুর্বৃত্ত পাড়ায় ঢুকে, তাদের বাড়ির দক্ষিণের দুটি বাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এর মধ্যে একটা বাড়িতে থাকা মাইক্রোবাসেও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। ওই জ্বলন্ত গাড়ির আগুন নিভাতে গিয়ে গাড়িতে থাকা সিলিন্ডার বিস্ফোরণে জহিরুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন।

তবে এ বিষয়ে গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, আমি এই থানায় নতুন এসেছি। আমাদের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই। থানায় অভিযোগ বা মামলার কোনো রেকর্ডও নেই।

/ফাহিম/মেহেদী/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়