সিডনির সমুদ্র সৈকতে এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত ১২, আহত ২৯
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে প্রকাশ্যে এলোপাথারি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আজ রবিবারের এ ঘটনায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ। খবর বিবিসির।
পুলিশ জানিয়েছে, কমপক্ষে আরো ২৯ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার সময় দুই পুলিশ কর্মকর্তাও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বন্ডি সমুদ্র সৈকতের উত্তর অংশে একটি জনাকীর্ণ এলাকায় বন্দুক হামলার ঘটনাটি ঘটে। হঠাৎই আচমকা গুলির শব্দ শোনা যায়। আতঙ্কে মানুষ ছুটে পালাতে থাকে। গুলির শব্দ রিপোর্ট করায় হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
বন্ডি সমুদ্র সৈকতে আট দিনব্যাপী ইহুদি উৎসব হানুক্কার প্রথম রাতে এই বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটলো। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, গুলিবর্ষণের সময় প্রায় ৫০টি গুলি চালানো হয়েছে।।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় মোট দুজন হামলাকারী জড়িত ছিল। নিহত ১২ জনের মধ্যে একজন বন্দুকধারী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। অন্য বন্দুকধারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তিনি মারাত্মক আহত হয়েছেন।
অভিযান এখনো চলমান থাকায় জনসাধারণকে সমুদ্র সৈকতের আশপাশের এলাকায় না যাওয়া এবং নির্দেশ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এক বিবৃতি বন্ডির ঘটনাটিকে ‘মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ কমিশনার এবং নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) প্রিমিয়ারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, “আমরা নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের সঙ্গে কাজ করছি এবং আরো তথ্য নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে আরো আপডেট প্রদান করব।”
তিনি আরো বলেন, “পুলিশ এবং জরুরি প্রতিক্রিয়াকারীরা জীবন বাঁচাতে মাঠে কাজ করছেন।”
বিবিসি প্রতিবেদন অনুসারে, অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ১৯৯৬ সালে পোর্ট আর্থার হামলার পরে আজকের ঘটনাটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুক হামলা।
১৯৯৬ সালে, তাসমানিয়ার একটি পর্যটন স্থানে এক বন্দুকধারীর হামলায় ৩৫ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন। ওই হামলাটি ছিল দেশটির আইনশৃঙ্খলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যার ফলে অস্ট্রেলিয়ার সরকার বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন চালু করেছিল। যার ফলশ্রুতিতে দেশটিতে বন্দুক হামলার ঘটনা ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়।
এরপর থেকে দেশটিতে যে কয়েকটি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তার বেশিরভাগই পারিবারিক সহিংসতার ভয়াবহ ঘটনা, আজকের মতো পাবলিক প্লেসে হামলা নয়। ফলে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের কাছে আজকের ঘটনাটি অপরিচিত ও বিধ্বংসী এক ধাক্কা।
ঢাকা/ফিরোজ