ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বাকৃবি ও যবিপ্রবিতে দুই দৈনিক পুড়িয়ে বিক্ষোভ

বাকৃবি ও যবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২৫ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ২১:২৯, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
বাকৃবি ও যবিপ্রবিতে দুই দৈনিক পুড়িয়ে বিক্ষোভ

আমজনতার শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের অতর্কিত হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্বৈরাচারের মাস্টারমাইন্ড উল্লেখ করে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের দেশ-বিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান।

এছাড়া কারওয়ান বাজারে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাকৃবির আব্দুল জব্বার মোড়ে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

সমাবেশ চলাকালে শিক্ষার্থীরা প্রথম আলো পত্রিকা বয়কটের দাবিতে পায়ের নিচে রেখে বক্তব্য দেন। পরে তারা প্রথম আলো পত্রিকা পুড়িয়ে দেন।

এ সময় মো. মারুফ বিল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “অনেক আগে থেকে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত। তারা শুধু স্বৈরাচারের দোসরই নয়, অনেক আগে থেকে দেশ বিরোধী ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি এমন অনেক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে লিপ্ত। এছাড়াও তারা বিভিন্ন সময় ইসলামের বিদ্বেষ ছড়িয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের নাটক তৈরি করেছে।”

তিনি বলেন, “যারা পরিপূর্ণভাবে ইসলাম মানতে চায়, তাদের জঙ্গী প্রমাণ করতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে এ প্রথম আলো। প্রথম আলো শুধু এ দেশের শত্রু নয়, পুরো মুসলিম জাতির জন্য হুমকি। এ ইসলাম বিদ্বেষী প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারকে আমরা বয়কট করছি।”

মো. আল আমিন আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “এ প্রতিবাদ সরাসরি প্রথম আলোর কোনো ক্ষতি নাও করতে পারে। তবে এটি তাদের পতনের সূচনা। এ প্রতিবাদ সমাজকে সচেতন করার একটি প্রয়াস। আমাদের শত্রু কারা, সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করতে হবে। প্রথম আলো বিগত সরকারের আমলে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যে ন্যারেটিভ প্রয়োজন ছিল, তা অত্যন্ত সুচারুভাবে তৈরি করেছে।”

তিনি বলেন, “একদিকে তারা ফ্যাসিবাদী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভূমিকা রেখেছে, অন্যদিকে আলেম-ওলামা ও ইসলামকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেছে। ফলে বিগত সরকার ভারতের মদদপুষ্ট হয়ে ক্ষমতায় ছিল এবং দেশের মানুষের উপর স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করেছিল। এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো, জনগণকে এই বার্তা দেওয়া যে- প্রথম আলো আমাদের বন্ধু নয়।”

তিনি আরও বলেন, “পত্রিকাটি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তারা চায় বাংলাদেশ সারাজীবন ভারতের দালালি করুক। এর প্রতিবাদ শুধু এখানেই নয়, সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কাওরান বাজারের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। স্বৈরাচারী সরকারের আমলে এমন ঘটনা প্রত্যাশিত হলেও বর্তমান সরকারের কাছে এটা আমরা কামনা করি না।”

এদিকে, কারওয়ান বাজারে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ২টায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছেন। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন তাঁরা।

এসময় ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘দিল্লি আলো দিল্লি স্টার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, ‘প্রথম আলোর বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ভারতীয় রাজাকার, এই মূহুর্তে বাংলা ছাড়’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।

যবিপ্রবির শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান ইমরান বলেন, “প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা দুটি ভারতীয় দালাল। যাদের দাঁড়ি-টুপি থাকে, তাদের জঙ্গী তকমা দেয় তারা। গতকাল (রবিবার) প্রথম আলো অফিসের সামনে সাধারণ মুসলিম জনতার উপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যবিপ্রবির কোনো দপ্তর, লাইব্রেরি বা হলে যদি প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা রাখা হলে বিপ্লবী ছাত্রজনতা তা রুখে দিবে।”

গতকাল রবিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ দৈনিক প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে।

ঢাকা/লিখন/ইমদাদ/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়