ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৮ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ৫ ১৪৩১

আওয়ামীপন্থিকে উপ-উপাচার্য হিসেবে চান না যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

যবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৩, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২২:২৭, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আওয়ামীপন্থিকে উপ-উপাচার্য হিসেবে চান না যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীলীগপন্থি অধ্যাপক এএফএম সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এবার শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এতে তারা যবিপ্রবির উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টায় যশোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রফিকুল হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপি প্রদান শেষে প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনও করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে রাতের ভোটের কারিগরের স্বামী ড. সাইফুল ইসলামকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নিয়োগের পায়তারা চালানো হচ্ছে। আমরা প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীর গণস্বাক্ষর নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল নিশ্চিত না করা হলে আমরা ক্যাম্পাস অবরুদ্ধসহ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

আরো পড়ুন:

এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, যশোরে ফ্যাসিবাদী আন্দোলন যবিপ্রবি থেকে শুরু হয়েছে। আর আমাদেরই ক্যাম্পাসে কি না স্বৈরাচারের দোসরকে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে। যবিপ্রবি কি ডাস্টবিন? এ ক্যাম্পাস দেশের টপ র‍্যাংকিং স্থান নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়। স্বৈরাচারের দোসর নিয়োগের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে কেউ অস্থিতিশীল করে তুললে তাকেও ফ্যাসিবাদের মতো তাড়িয়ে দেওয়া হবে।

তারা আরো বলেন, এ স্বৈরাচারকে নিয়োগ দেওয়া মানে ২ হাজার শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা। যারা এই আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুর্ণবাসন করতে চায়, তারা যেই হোক না কেন, শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে তাদের রুখে দিবে। দ্রুতই ড. সাইফুল ইসলামের নিয়োগ বাতিল করুন নয়তো সুষ্ঠু আন্দোলনকে উচ্ছৃঙ্খল করে তুললে এর দায়ভার সম্পূর্ণ প্রশাসনকে নিতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিইএসএস বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান ইমরান, মো. ইসমাইল, ইএসটি বিভাগের মোহাম্মদ উসামাহ, হাবিব আহমেদ শান, কেমিকৌশল বিভাগের মেহেদী হাসান সাব্বির, গণিত বিভাগের সুমন আলি প্রমুখ।

শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর লিখিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি যে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের নেতা ও ক্রপ বোটানি অ্যান্ড টি প্রোডাকশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক এএফএম সাইফুল ইসলামকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা চলছে। আওয়ামী শাসন আমলে ২০১২ সালে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর হিসেবে পরিচিত সচিব ড. নাজমানারা খানুমের লবিংয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপান ড. সাইফুল।

আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের প্যানেল থেকে তিনি দুইবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন এই অধ্যাপক। এছাড়া ড. সাইফুল ইসলামের স্ত্রী ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে রাতের ভোটের মূল কারিগর ছিলেন। যার পুরস্কার স্বরূপ পরবর্তীতে তাকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

চাকরি শেষে আবারো পুরস্কার হিসেবে শেখ হাসিনা তাকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেই গত বছরের ৮ অক্টোবর ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে ড. নাজমানারা খানুমকে পিএসসির সদস্য থেকে বরখাস্ত করে। সুতরাং এমন একজন স্বৈরাচার ও আওয়ামীপন্থিকে আমরা যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য হিসেবে চায় না।

অধ্যাপক এএফএম সাইফুল ইসলামকে যবিপ্রবির উপ-উপাচার্য বানানোর চেষ্টার খবর জানার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা  বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করছেন।

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়