ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অবৈধ দোকান–স্থাপনা

ঢাবি সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৬, ১৫ মে ২০২৫   আপডেট: ১৪:৩৪, ১৫ মে ২০২৫
গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অবৈধ দোকান–স্থাপনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গেট এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বেলা ১১টার আগে এ অভিযান শুরু হয়।

আরো পড়ুন:

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর জানান, উদ্যানের ভেতরের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। রাজউক থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চলছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দুটি বুলডোজার দিয়ে উদ্যানের ভেতরের দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত অন্তত ১০টি ছোট ছোট স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় সেখানে আনসার ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে কেউ বাধা দেননি।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি সংলগ্ন ফটকে গিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে দেখা যায়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এস্টেট ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) ফাতেমা বিনতে মুস্তাফা উপস্থিত ছিলেন।

উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছি। এটি একটি জাতীয় উদ্যান। নারী পুরুষ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে, নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে সেই উদ্দেশ্যেই আমাদের এই অভিযান। এখানে যে সকল অবৈধ স্থাপনা আছে আমরা উচ্ছেদ করে দিয়েছি।”

অবশ্য এমন অভিযান পরিচালনা করার কথা আগেই জানানো হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর ঢাবি প্রশাসন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে সভা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

তিনি তার ফেসবুক পোস্টে সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে জানান-

১. রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেটটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হবে।

২. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ, মাদক ব্যবসা বন্ধ এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, ডিএমপি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালিত হবে।

৩. নিয়মিত মনিটরিং ও অভিযানের জন্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

৪. উদ্যানে পর্যাপ্ত আলো ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং সেগুলোর নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।

৫. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি ডেডিকেটেড পুলিশ বক্স স্থাপন করা হবে।

৬. উদ্যানে রমনা পার্কের মতো সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা চালু করা হবে।

৭. রাত ৮টার পর উদ্যানে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে।

অবিলম্বে এসকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে এক আতঙ্কের স্থান থেকে ধীরে ধীরে একটি নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক স্থানে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। ইতোমধ্যে সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

ঢাকা/সৌরভ/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়