ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চবির হলে পাওয়া আসন স্থগিত করায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১২, ২২ মে ২০২৫  
চবির হলে পাওয়া আসন স্থগিত করায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শহিদ মো. ফরহাদ হোসেন হল ও অতীশ দীপঙ্কর হলে বৈধভাবে আসন বরাদ্দ দিয়ে পরে তা স্থগিত করায় বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকাল ৫টার মধ্যে বিষয়টির সমাধান না করলে হলে ওঠার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে তারা আল্টিমেটাম দেন।

আরো পড়ুন:

জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর ফরহাদ হোসেন হল ও অতীশ দীপঙ্কর হলে আবাসন বরাদ্দের আবেদন নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর ভিত্তিতে ফরহাদ হোসেন হলে বরাদ্দপ্রাপ্তদের নাম উল্লেখ করে ফলাফল দেয় আইসিটি সেল। হলটিতে সিট সংখ্যা ৭০০। এরমধ্যে ৫৩০ জন শিক্ষার্থীর হলে সিট নিশ্চিত করা হয়েছে। বাকি ১৭০ জনের আসন স্থগিত করা হয়েছে।

অন্যদিকে, একই সমস্যায় অতীশ দীপঙ্কর হলেও প্রায় ৩০ জনের আসন স্থগিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই হলগুলোতে উঠেছেন। ভাইভাতে বাকি ২০০ জন শিক্ষার্থীর সিট স্থগিত রাখা হয়েছে। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলছেন, বর্ষ নিয়ে প্রশাসন যে সমস্যার কথা জানিয়ে আমাদের সিট স্থগিত রেখেছে, আসলে এতে আমাদের কোনো ভুল ছিল না। আবেদন ফরম অনুযায়ী আমাদের সবকিছু শতভাগ সঠিক। পরে প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে যৌক্তিক সমাধানের কথা জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। এতে তারা আবাসন সংকট নিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ছেন।

এদিকে, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. ড. কামাল উদ্দিন তাদের বৃহস্পতিবার (২২ মে) সমাধানের কথা জানায়। কিন্তু আইসিটি সেল থেকে বলা হয়েছে এখন সমাধান অসম্ভব। বিষয়টির সমাধান কবে হবে তা শিক্ষার্থীদের জানায়নি আইসিটি সেল।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসন থেকে দেওয়া ফর্ম অনুযায়ী যথাযথ নিয়মে আবেদন করে মেধার ভিত্তিতে শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে আসন বরাদ্দ পেয়েছি আমরা। এরপর সাক্ষাৎকারে হঠাৎ বর্ষ সংক্রান্ত সমস্যার কথা উল্লেখ করে আমাদের আসন স্থগিত করে দেয়। সমস্যার সমাধানে প্রাধ্যক্ষ থেকে আইসিটি সেল হয়ে প্রক্টর অফিস, উপ-উপাচার্য অফিসে গত ১৩ এপ্রিল থেকে আমাদের চরকির মতো ঘুরানো হচ্ছে। প্রশাসন থেকে সমাধানের আশ্বাস দিলেও তার কোনো অগ্রগতি নেই।”

তিনি আরো বলেন, “গত ১৭ মে উপ-উপাচার্য স্যার আমাদের বলেছিলেন, আজ (২২ মে) আমাদের বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু আইসিটি সেলের পরিচালক আমাদের জানিয়েছে, এখন সমাধান অসম্ভব। কখন সমাধান হবে সে সম্পর্কেও তিনি কথা বলতে চান না। তিনি বলছেন, এর সমাধান একমাসেও হতে পারে, ছয় মাসও লাগতে পারে। এজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সমস্যার সমাধান না হলে আজ বিকেল ৫টায় আমরা আমাদের বরাদ্দকৃত হলে সবাই উঠে যাব। এছাড়া আমাদের আর কোন পথ নেই।”

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, “দীর্ঘ দেড় মাস ধরে আমরা আমাদের বৈধ আসন নিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছি। প্রশাসন বিষয়টি সমাধান করলেও কার্যত আমাদের দিকে তাদের কোনো দৃষ্টি নেই। সমাবর্তনের পরে ওঠানোর কথা বললেও এখন তাদের কোনো সাড়া নেই। আমরা আর কারো কাছে ঘুরব না। বিকেল ৫টার মধ্যে সমাধান না করলে আমরা হলে উঠে যাব।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল পরিচালক অধ্যাপক সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, “এটির সমাধান এখন সম্ভব নয়। বর্তমানে ভর্তি কার্যক্রম নিয়ে অনেক ব্যস্ততা চলছে। হলের সিটের সমস্যার চেয়েও আমাদের আরো বড় কাজ আছে। কাজেই প্রাধান্যের দিক দিয়ে যেটি এগিয়ে, সেটিই আগে করছি।”

তিনি বলেন, “কবে নাগাদ এটির সমাধান করতে পারব তা বলতে পারছি না। এটি একমাসও লাগতে পারে, আবার ছয় মাসেও লাগতে পারে। এ বিষয়ে আপাতত শিক্ষার্থীরা যেন আমাাদের অন্যান্য কাজে ব্যাঘাত না ঘটায়।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় আসন বরাদ্দ কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “নতুন দুই হলের বর্ষ সংক্রান্ত সমস্যাটি সমাধানের কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব সমাধান হবে। এখন শিক্ষার্থীরা হলে উঠে গেলে এর দায়দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে।”

কবে নাগাদ বিষয়টির সমাধান হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা দিতে পারছি না। তবে ঈদের আগে হলে উঠানোর বিষয়ে তাদের কয়েকবার বলেছি। ঈদের আগে তাদের হলে উঠানো হবে।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়