ঢাকা     বুধবার   ১৬ জুলাই ২০২৫ ||  শ্রাবণ ১ ১৪৩২

সোহরাওয়ার্দী কলেজে ছাত্রদলের ছায়ায় ‘বেপরোয়া’ ছাত্রলীগ কর্মী

সোহরাওয়ার্দী কলেজ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৯, ৩১ মে ২০২৫  
সোহরাওয়ার্দী কলেজে ছাত্রদলের ছায়ায় ‘বেপরোয়া’ ছাত্রলীগ কর্মী

সোহরাওয়ার্দী কলেজের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী সাকিল আহমেদ ও তার ভাইরাল হওয়া দুইটি স্কিনশর্ট

সোহরাওয়ার্দী কলেজের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী সাকিল আহমেদের বিরুদ্ধে শাখা ছাত্রদলের ছত্রছায়ায় বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে।

তিনি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযোগে জানা গেছে, শুক্রবার (৩০ মে) সোহরাওয়ার্দী কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি সংবাদ সম্মেলনে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি এক সদস্যের হাত থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেন। এছাড়া ওই সাংবাদিককে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

পরে বিষয়টি জানতে পেরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হোসেন এসে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি জসিমউদ্দীনকে জানালে তিনি সাকিলকে সরি বলতে বলেন এবং সমঝতা করে দেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড না করার জন্যও সতর্ক করে দেন।

এছাড়া, তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে বেপরোয়া আচরণ করতেও দেখা গেছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আগে ছাত্রলীগের রাজনীতি করলেও গত ৫ আগস্টের সাকিল আহমেদ খোলস পাল্টিয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের ছত্রছায়ায় আশ্রয় নেন। ছাত্রলীগের লেবাস পরিবর্তন করতে ৫ আগস্টের পর তিনি তার আগের ফেসবুক আইডি বন্ধ করে নতুন আইডি খোলেন।

তার আগের আইডির নাম ছিল এস বি সাকিল আহমেদ। ওই আইডির মাধ্যমে তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রচারণা চালাতেন। এ সংক্রান্ত দুটো স্কিনশর্ট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এর একটি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন নিয়ে এবং অপরটি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবসের। ছাত্রলীগের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ বর্তমান আইডিতেও রয়েছে বলে জানা গেছে।

গত ৫ আগস্টের পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি জানতে পেরে তাকে বিভাগের মেসেঞ্জার গ্রুপ থেকে বের করে দেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক সহপাঠি বলেন, “সাকিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে থেকে বিভিন্ন হুমকি দিত এবং আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট দিত। এজন্য তাকে আমাদের বিভাগের মেসেঞ্জার গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এটা আমাদের ব্যাচের ১৪৭ জন শিক্ষার্থীর সবাই জানে।”

তবে অভিযোগের বিষয়ে সাকিল আহমেদ বলেন, “ওই আইডিটা আমার না, এটা অন্য কারো আইডি। আমি ছাত্রলীগ করি বা ছাত্রলীগের সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টটা আছে- এমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারলে আপনারা যে শাস্তি দেবেন, মাথা পেতে নিব। আমার পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।”

এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি জসিমউদদীন বলেন, “সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলে ছাত্রলীগের কোনো দোসরদের জায়গায় হবে না। এমন কেউ থাকলে তার বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”

তিনি বলেন, “সাকিলের বিষয়ে আমি খোঁজখবর নিয়েছি, সে ছাত্রলীগ করত না। ওই আইডি আর তার আগের আইডির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সেটা আপনারা ভালো করে দেখলেই বুঝতে পারবেন।”

ঢাকা/ইয়াসিন/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়