জাকসু নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ছাত্রদল সম্পাদক নাছিরের
জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
রবিবার (১৭ আগস্ট) জাবি শাখা ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মেটাতে ক্যাম্পাসে আসেন নাছিরসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।
এ সময় শাখা ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনাকালে জাকসুর প্রসঙ্গ আসলে নাছির এ আপত্তিকর মন্তব্য করেন। নাছিরের মন্তব্যের ২৭ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড এই সংবাদদাতার হাতে এসে পৌছেছে।
অডিও রেকর্ডে তাকে বলতে শুনা যায়, “কেউ যদি অন্যায় করে তার শাস্তি হবে। সেটা কমিটি হোক, প্রেসিডেন্ট হোক, সেক্রেটারি হোক। আমি নাসির হইলে তারও হবে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে তোমরা অন্যায় করে পার পেয়ে যাবা।”
তার এ কথার প্রতিত্যুরে নেতাকর্মীরা বলতে থাকেন, না ভাই। আমরা অন্যায়ের বিপক্ষেই আছি। জাকসুর আগ দিয়েই…… (শব্দটি বোঝা যায়নি)।
এ সময় নাছির উচ্চ শব্দে বলেন, “আরে ভাই জাকসু হবে না, বালের জাকসু।”
এর আগে, রবিবার সকালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের একটি শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মেটাতে আলোচনা ও বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে অংশ নিতে ক্যাম্পাসে আসেন। এ সময় শাখা ছাত্রদলের দুপক্ষের মধ্যে নাসিরের সঙ্গে দেখা করা নিয়ে হাতাহাতি হয়।
জানা যায়, পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াসহ কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা ক্যাম্পাসে আসেন। দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন বাবর, সদস্যসচিব ওয়াসিম আহমেদসহ ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে অবস্থান করছিলেন। অন্য নেতাকর্মীরা ক্যাফেটেরিয়ায় ছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরই ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীর একটি দল বাইকে মহড়া দিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার নিচে আসেন।
আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে এনেছেন—এমন স্লোগান দিলে সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বহিরাগত কয়েকজনকে ধাওয়া দেন। এরপর তারা ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীরা গেট আটকে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম এসে দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তবে এসময় তারা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ ‘সুপার ফাইভ’র সঙ্গে আলোচনায় বসতে আপত্তি জানান। ফলে শাখা ছাত্রদলের শীর্ষ পাঁচ নেতা ও তাদের অনুসারীরা ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে নিচে অবস্থান নেন।
কিছুক্ষণ আলোচনার পর সেন্ট্রাল মসজিদে দোয়া মাহফিলের জন্য যান নাছিরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। দোয়া মাহফিল শেষে তারা পুনরায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এ সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা ও বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে নাছির উদ্দীন নাছির এ আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
মন্তব্যের বিষয়ে জানতে নাছির উদ্দিন নাছিরের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী