ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ইবিতে অভ্যুত্থানবিরোধী ১৯ শিক্ষকসহ ৬১ জনের শাস্তির সুপারিশ

ইবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৯, ১৮ আগস্ট ২০২৫  
ইবিতে অভ্যুত্থানবিরোধী ১৯ শিক্ষকসহ ৬১ জনের শাস্তির সুপারিশ

ফাইল ফটো

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকা চিহ্নিতকরণ কমিটির প্রতিবেদনে ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ৩১ জন শিক্ষার্থীর নাম উঠে এসেছে।

রবিবার (১৭ আগস্ট) তালিকায় নাম আসা ১৯ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই মর্মে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

সোমবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল ইসলাম কারণ দর্শানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা বিরোধী ভূমিকায় ছিলেন, তাদের চিহ্নিত করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির প্রতিবেদনে ১৯ জন শিক্ষকের নাম উঠে আসে।”

তিনি আরো বলেন, “রবিবার সেই ১৯ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এ ব্যাপারে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।”

জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে বিরোধিতাকারীদের নাম ওই তালিকায় এসেছে এবং ১৯ জন শিক্ষককে শোকজ দেওয়া হয়েছে। তবে আন্দোলনবিরোধী বিভিন্ন পরিকল্পনাকারী এবং পৃষ্ঠপোষকদের নাম এই তালিকায় আসেনি। ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে, গত জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ওইসব শিক্ষকদের হুমকি-ধামকি, ভীতি প্রদর্শন, মারমুখী আচরণ, গালিগালাজ, মিছিলে উসকানিমূলক শ্লোগান প্রদান এবং পুলিশি হয়রানির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নোটিশে নাম উল্লেখিত শিক্ষকরা হলেন- ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম, অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাশিদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আক্তারুল ইসলাম জিল্লু, সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, অধ্যাপক ড. সেলীনা নাসরিন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা।

এছাড়া আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল, অধ্যাপক ড. শাহজাহান মন্ডল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জয়শ্রী সেন, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল’ বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসানের নাম উল্লেখ আছে।

রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মনজুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী ভূমিকা নিয়েছিলেন তাদের চিহ্নিত করতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বাধ্য থাকলেও সময় বৃদ্ধির পর ১৩ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেয়।

গত ১৬ মার্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ভূমিকা নেওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে পাঁচ সদস্যদের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পরবর্তীতে সময় বৃদ্ধি করে গত ১৩ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়