জাবিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেনা সদস্যদের বিচার দাবি
জাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেনা সদস্যের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের অধীনে বিচার নিশ্চিতের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার পাদদেশে এই কর্মসূচির আয়োজন করে জাবি শাখা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)।
এ সময় বাগছাস জাবি শাখা সদস্য এবং জাকসুর কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ আলী চিশতী বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী আমাদের সেনাবাহিনী। তাদের সমর্থনে জুলাই আন্দোলন সফল হয়েছে। সেনাবাহিনীর যারা জাতীয় বীর তাদের মূল্যায়ন করা হোক। তবে বিগত সময়ে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য গুম, খুন, হত্যা ও লুণ্ঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল।”
তিনি বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সোপর্দ করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক। আগামীদিনে কেউ বাংলাদেশ পন্থার বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করতে না পারে, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।”
বাগছাস জাবি শাখা সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা বলেন, “আমাদের দেশের সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও আওয়ামী শেষ পেরেক মারে সরকারের অধীনে থাকা ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে গুম ও খুনের মাধ্যমে। আমাদের আফসোসের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, গুম, খুনের সঙ্গে যে-সকল কর্মকর্তা এবং তাদের আন্ডারে যারা কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রমাণ দিতে ব্যর্থতা এবং অপারগতা দেখা যাচ্ছে। আমরা গোয়েন্দাদের বলতে চাই— আপনারা জামায়াত-বিএনপি নেতাকর্মীদের অজপাড়াগাঁ থেকে খুঁজে খুঁজে আনতে পারেন, কিন্তু অভিযুক্ত সেনা সদস্যদের খুঁজে পাচ্ছেন না।”
তিনি বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগ এবং গোয়েন্দাদের কঠিন হুঁশিয়ারি সুরে বলতে চাই, আপনারা যারা এসব নাটক খেলছেন, ছাত্রসমাজ এসব বুঝে। আপনারা আদালত থেকে ছাড় পেলেও ছাত্রসমাজ থেকে ছাড় পাবেন না। দীর্ঘ ১৫ বছরে নির্যাতিত বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরাও মুখে কুলুপ এঁটে আছে, তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলছে না। কিন্তু আমরা যারা ভুক্তভোগী এবং আপামর জনগণের সময় এসেছে এ বিষয়ে কথা বলার, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের বিচার নিশ্চিত হচ্ছে।”
বাগছাস জাবি শাখার সিনিয়র সদস্য সচিব এবং জাকসুর সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন-বিষয়ক সম্পাদক আহসান লাবিব বলেন, “আমরা গুম কমিশনের রিপোর্টে দেখেছি কীভাবে বিরোধী মতের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বাসা থেকে তুলে এনে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছে আয়না ঘরে। নারীদের আয়না ঘরে ধর্ষণ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তবে বিগত হাসিনা সরকার তাদের কিছু অফিসারকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কর্তৃক সেই অপরাধীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানায়া জারি করেছে। আমরা চাই, তাদের বিচার মার্শাল কোর্টে নয়, অপরাধ আদালতের মাধ্যমে হতে হবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী