ঢাকা     সোমবার   ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জাবির আবাসিক হলে আটকে রেখে নবীনদের র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৫  
জাবির আবাসিক হলে আটকে রেখে নবীনদের র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ

ফাইল ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) একটি আবাসিক ছাত্র হলের কক্ষে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ৫৪ ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীদের আটকে রেখে র‍্যাগিং করার অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার (১২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ নম্বর ছাত্র হলের ৪০৩ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিক, হলের নিরপত্তা প্রহরী ও হল সংসদের নেতারা গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করেন।

আরো পড়ুন:

ঘটনার সঙ্গে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের ১৫ জন শিক্ষার্থী এর সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

জানা যায়, রবিবার রাত ১০টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম ও ২১ নম্বর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক বোরহান উদ্দিনকে অবহিত করে একটি দল হলের ওই হলের ৪০৩ নম্বর কক্ষে যায়। এ সময় ২১ নম্বর হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি উল্লাহ আল-মাহদী, আ ফ ম কামালউদ্দিন হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবরার শাহরিয়ার এবং দুইজন হলের নিরাপত্তা প্রহরীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানের শুরুতে কক্ষটির বাইরে ৫৩তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে পাহারারত অবস্থায় দেখা যায়। ভেতরে থাকা অন্যদের মুঠোফোনে খবর দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে বাঁধা দেওয়া হয়।

পরে কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, ঘরটি সম্পূর্ণ অন্ধকার এবং দরজা-জানালা বন্ধ। সেখানে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৫৪তম ব্যাচের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীকে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের সবার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে একপাশে বন্ধ করে রাখা ছিল। প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ভয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।

কক্ষে উপস্থিত ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জানায়, একটি অনুষ্ঠানের আলোচনার জন্য জুনিয়রদের ডাকা হয়েছে। গরমের কারণে আলো নেভানো ছিল এবং পাশের কক্ষে পরীক্ষার্থী থাকায় শব্দ এড়াতে দরজা-জানালা বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে তারা দাবি করেন।

র‍্যাগিং এর সাথে যুক্ত ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন— সাইদ, তানভীর রহমান মুন, আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ, আবু তালহা রনি, রাজিব শেখ, ইয়ামিন খান হৃদয়, আবু সাইদ, জান্নাতুল আদন, আহমেদ আরেফিন রাতুল, রেজওয়ান ইসলাম রিফাত, তাসনিমুল হাসান জুবায়ের, রুম্মান, রাকিবুল হাসান নিবিড়, জাহিদুল ইসলাম এবং উশান্তা ত্রিপুরা।

অভিযুক্ত তানভীর জামান মুন বলেন, “পরীক্ষার কারণে আমরা নবীন বরণ অনুষ্ঠান করতে পারিনি। তাই আলোচনার জন্য তাদের ডেকেছিলাম।”

তবে হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি উল্লাহ আল-মাহদী বলেন, “আমরা এসে দেখি দরজা-জানালা বন্ধ করে জুনিয়রদের দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। তারা ভীতসন্ত্রস্ত ছিল এবং তাদের ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমরা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি এবং এর বিচার নিশ্চিত করব। র‍্যাগিংয়ের বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশেদুল আলম বলেন, “আমি গতকাল ঘটনা জানার পর হলটির প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের একটি তদন্ত রিপোর্ট দেবেন। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন) সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। র‍্যাগিংয়ের বিষয়ে কোনো শিথিলতা নয়।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়