ঢাকা     মঙ্গলবার   ২১ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩১

৫০ শতাংশের বেশি ব্যাংক কর্মকর্তা সাইবার নিরাপত্তায় অজ্ঞ

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ১৬ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৫০ শতাংশের বেশি ব্যাংক কর্মকর্তা সাইবার নিরাপত্তায় অজ্ঞ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : ৫০ শতাংশের বেশি ব্যাংক কর্মকর্তার ব্যাংকিং খাতের সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।  তারা এ বিষয়ে পুরোপুরি অজ্ঞ।

মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘ব্যাংকিং খাতে সাইবার নিরাপত্তা’ শীর্ষক কর্মশালায় বিআইবিএমের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

২১ টি ব্যাংকের উপর এ জরিপ চালায় বিআইবিএম। যার মধ্যে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১৪ টি, রাষ্ট্রায়াত্ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংক ৩টি এবং বিদেশী ব্যাংক ৩টি।

প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে ২৮ শতাংশ ব্যাংক কর্মকর্তা খুবই অজ্ঞ এবং ২২ শতাংশ অজ্ঞ। এছাড়া মাত্র ২০ শতাংশ কর্মকর্তার এ বিষয়ে সামান্য ধারণা রয়েছে।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ব্যাংকগুলোতে সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে খুবই ভালো ধারণা রয়েছে ৪ শতাংশ, ভালো ধারণা ১০ শতাংশ এবং মোটামুটি ধারণা রয়েছে ১৬ শতাংশ ব্যাংক কর্মকর্তার।গ্রাহকদের মধ্যে এক জরিপ দেখা গেছে ৫৪ শতাংশ গ্রাহক সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে অজ্ঞ।

বিআইবিএমের প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ৯০ শতাংশ ব্যাংক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ব্যাংকিং খাতে সাইবার ঝুঁকি বাড়ছে। ব্যাংকিং খাতের তথ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, নতুন প্রযু্ক্তি সম্পর্কে ব্যাংক কর্মকর্তাদের জ্ঞানের অভাব, গ্রাহকদের অসচেতনতা, ব্যাংকগুলোর বাইরের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর অতি নির্ভরশীলতা, ব্যাংকিং খাতে আইটি এক্সপার্টের অভাব, প্রশিক্ষণ না থাকা এবং বাজেটের স্বল্পতা।

ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তার জন্য গত কয়েক বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিবছর আইটি নিরাপত্তায় রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ আরও দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এরপরও দেশের  অনেক ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গাইডলাইন অনুযায়ী নিরাপত্তার মানে পৌঁছাতে পারেনি।’ 

তিনি বলেন, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর সাইবার আক্রমণ প্রায়ই ঘটছে এবং সেগুলো খুব বড় ধরণের  ও জটিল। আর্থিক খাতের পুরো ব্যবস্থাকে নষ্ট করে ফেলেছে। এ অপরাধীরা সাইবার আক্রমণ করে বড় অংকের তহবিল হাতিয়ে নিচ্ছে। একই সঙ্গে এটিএম জালিয়াতির মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে।’

বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘সাইবার ঝুঁকিকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। এ ধরণের একটি বড় ঝুঁকি ব্যাংকিং খাতে থাকলেও দক্ষ কর্মীর অভাব রয়েছে। তাই ভারতের মতো আলাদা প্রতিষ্ঠান গড়ে ব্যাংকারদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।’

পূবালী ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ আলী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংককে আইটি নিরাপত্তা খাতে আরো জোর দিতে হবে। কোনো সংকেত এলেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ ব্যাংকে অ্যালার্ট ম্যাসেজ দেখলেও ঠেকানোর জন্য জনবল নেই।’

কর্মশালায় সাইবার নিরাপত্তা শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাজডাক টেকনোলজি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ মে ২০১৭/এম এ রহমান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়