ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বাজেটে ব্যবসায়ীদের জন্য এফবিসিসিআইয়ের নতুন প্রস্তাব

জুনায়েদ শিশির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২০, ১৮ জুন ২০২১   আপডেট: ১৮:২৬, ১৮ জুন ২০২১
বাজেটে ব্যবসায়ীদের জন্য এফবিসিসিআইয়ের নতুন প্রস্তাব

নতুন অর্থবছর ২০২১-২০২২ সালের চূড়ান্ত বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে এফবিসিসিআই স্বল্পমেয়াদ, মধ্যমেয়াদ ও দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তাব তৈরি করেছে। ইতিমধ্যে এসব প্রস্তাবনা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এফবিসিসিআই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এফবিসিসিআই অধিভুক্ত চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশন ও স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে চলমান করোনা পরিস্থিতি ও সরকারি ভিশনকে সামনে রেখে বাজেট পরবর্তী এসব প্রস্তাবনা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

স্বল্প মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য এফবিসিসিআই- অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এবং আগাম কর প্রত্যাহার; উৎসে আয়কর ২ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা; পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের ওপর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ টার্নওভার কর আরোপ; শিল্প, সেবা ও ব্যবসায়িক খাতের টার্নওভারের উপর ৩ শতাংশ, ৪ দশমিক ৫ এবং ৬ শতাংশ হারে মূসক বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

একইসঙ্গে সব রপ্তানি খাতের করপোরেট কর ১০ শতাংশ ধার্য করা; ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আয়কর ৩৫ শতাংশ এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পের আয়কর ১০ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

জানা গেছে, এসব প্রস্তাবনা নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। প্রস্তাবনা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে তার সহযোগিতা চেয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি।

এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে প্রস্তাবনাসহ চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

১০ শতাংশ হারে করপোরেট করের প্রস্তাব
প্লাস্টিক সেক্টরের রপ্তানির জন্য করপোরেট কর ১০ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সুবিধা শুধুমাত্র গার্মেন্টস সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ এ পর্যন্ত গ্রহণ করে আসছে।  রপ্তানিমুখী শিল্প খাতকে আলাদা বা পার্থক্য না করে সব রপ্তানি খাতের করপোরেট করহার সমান ১০ শতাংশ হারে ধার্য্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে।  

অগ্রিম আয়কর
এফবিসিসিআই মনে করে, অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ব্যবসায়িক খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। মূসক নিবন্ধিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওপর আরোপিত অনধিক ২০ শতাংশ অগ্রিম আয়কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা; এবং শিল্প পরিচালনা ব্যয় কমানোর জন্য আমদানি পর্যায়ে শিল্প খাতের প্রদেয় ৩ শতাংশ আগাম কর (এটি) প্রত্যাহার করা।

উৎসে আয়কর
সরবরাহ এবং লেনদেনের পর্যায়ে ৩১টি বিভিন্ন হারে উৎসে আয়কর বহাল আছে।  এসব হার রহিত করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ২ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা।

টার্নওভার কর
গত আয়কর হিসাবে নির্ণীত চূড়ান্ত টার্নওভারের ভিত্তিতে পাইকারি বিক্রেতা ও খুচরা বিক্রয়ের ওপর ০.৫ শতাংশ হারে টার্নওভার কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।  

এছড়া, শিল্প, সেবা ও ব্যবসায়িক খাতে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত টার্নওভারের ওপর ৩ শতাংশ টার্নভার কর নির্ধারণ করা।  ১০ কোটি টাকার বেশি টার্ন ওভারকারি যেসব শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠান মূসক রেয়াত নিতে সক্ষম নয় তাদের জন্য সরবরাহ মূল্যের ওপর, শিল্প খাতে ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজন হিসাব করে ১৫ শতাংশ হারে অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৪০ শতাংশ মূল্য সংযোজন হিসাব করে ১৫ শতাংশ হারে অর্থাৎ ৬ শতাংশ মূসক বহাল রাখা।  

ক্যাপিটাল মেশিনারী আমদানি শুল্ক
নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি এবং নৌ-পরিবহন সহজলভ্য করতে এবং সরকারের ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে পরিবেশ সহায়ক ড্রেজিং-এর জন্য ব্যবহৃত কাটার সেকশন ড্রেজারকে ক্যাপিটাল মেশিনারী হিসেবে ১ শতাংশ শুল্কে আমদানির সুযোগের প্রস্তাব করা হয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আয়কর
বিনিযোগ বৃদ্ধির স্বার্থে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আয়করের হার ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ এ নামিয়ে আনা।

হিমাগারের আয়কর
কৃষিভিত্তিক (বর্তমানে কৃষি খাত আয়করমুক্ত) হিমাগার শিল্প খাতে আয়কর ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

/শিশির/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ