ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কৌশলগত কারণে চিঠিতে ঋণের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি: অর্থমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৪, ২৭ জুলাই ২০২২  
কৌশলগত কারণে চিঠিতে ঋণের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি: অর্থমন্ত্রী

ফাইল ছবি

কৌশলগত কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে দেওয়া চিঠিতে ঋণের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি বলে জানিয়েছন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভা শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে এ কথা বলেন।

গত সপ্তাহে আইএমএফ এর কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, তাদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া আপাতত প্রয়োজন নেই। এর দুদিন পরই গণমাধ্যমে এসেছে ঋণ চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বব্যাংকে যাব, জাইকায় যাব, সব জায়গায় সব সময় চেষ্টা করি আমাদের যে ঋণ প্রয়োজন হয় তা ভালো সুদে ও ভালো শর্তে নিতেই অনেক পদক্ষেপ নিতে হয়।

তিনি বলেন, আইএমএফ টিম এখানে এসেছিলো, তারা প্রতি বছরই আসে। বাৎসরিক কনসালটেশন করা জন্য এ বছরও এসেছে। সে সময় যদি বলি আমাদের টাকা দরকার, তখন তারা টাকা দিলেও সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।  গ্রহীতা হিসেবে আমরাও খুব ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করি। আমরা ভাব দেখাই আমাদের দরকার নাই, এটাই হলো মূল কথা। এটি দেশের ভালোর জন্য করা হয়েছে। এতে কোনো রকম টাকা-পয়সা নেওয়া হয়নি, দেন দরবার হয়নি। সুতরাং চিন্তার কোনো কারণ নেই।

আইএমএফকে দেওয়া চিঠিতে লোনের পরিমাণ ৪.৫ বিলিয়ন ডলার উল্লেখ করা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো পরিমাণ উল্লেখ করিনি। আপনি কোথায় পেয়েছেন আমরা কি পরিমাণ লোন চেয়েছি। আমি তো চাইনি, তাহলে কে চাইতে পারে? এটা আমার মনে হয় ভুল বোঝাবুঝি। আমরা যা করবো, আমরা যদি লোন নেই সেক্ষেত্রে আমার দায়িত্ব আপনাদের ব্যাখ্যা দেওয়া। কারণ আমি সবসময় ব্যাখ্যা দিতে রাজি।

সুদের হার উঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের সুদের হার ৬ ও ৯ হওয়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজকে আজ এ অবস্থানে আছে। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো। আপনারা ভালোটা দেখে যদি না বলেন, তাহলে আমাদের সমস্যা। যদি ৬ ও ৯ শতাংশ হারে সুদ না হতো, তাহলে কোভিড পরিস্থিতিতে ছোট, বড়, মাঝারি কোনো প্রতিষ্ঠানকে খুঁজেও পেতাম না। এটা সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। দরকার লাগলে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক তাদের মতো বলবে। তাদের যে চাহিদা সেটা পূরণের চেষ্টা করবে। তারা বাংলাদেশের প্রশংসা করবে, আমরা যা করেছি।

মন্ত্রী বলেন, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক বরাবর বলে যাচ্ছে বাংলাদেশ ভালোভাবে এগুচ্ছে। আমরা ৬ ও ৯ শতাংশ করার কারণে ব্যাংকিং খাত স্থিতিশীল অবস্থা আছে। সরকারি ব্যাংকগুলোকে দায়িত্ব দিয়েছি তাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য। পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরের ব্যাংকগুলো যেটা লালে ছিলো সেটা সবুজ হয়েছে।

আইএমএফের ঋণ প্রসঙ্গে আর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যদি বলি আমার দরকার, আমরা তো ডলার প্রিন্ট করি না। ডলার আমাদের অর্জন করতে হয়। আমরা ডলার অর্জন করি, বিদেশে কর্মরত যে শ্রমিকরা আমাদের ডলার পাঠাচ্ছেন তাদের মাধ্যমে। যারা দেশ থেকে গিয়ে বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন তারা আমাদের সেই ডলার বা বিভিন্ন কারেন্সি দিয়ে সাহায্য করে, তারাই আমাদের চালিয়ে নিচ্ছে। অল্প দিনের মধ্যে খারাপ কোনো অবস্থা হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা যখন অর্থনীতি ম্যানেজ করি আমাদের কাছে বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিত দেখতে হয়। আমাদের ঋণ দরকার। আর কিছুদিন, এরপর ঋণ থাকবে না। আমরা তো বলেছিলাম ঋণ আমরা দেব। আমি আবারও বলি আমরা ঋণ দিতে পারব। আমি আমার চাহিদা সবাই জানালে আমার কাছ থেকে খরচটা বেশি নেবে, সেজন্যই প্রয়োজন নেই বলেছি। এভাবেই আমাদের ম্যানেজ করতে হয়। ঋণের বিষয়টি যেন কোনোভাবেই আমাদের বিপক্ষে না যায়। আমরা অর্থ চাই, আমরা বলেছি। কিন্তু কত লাগবে সেটি বলিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা কি শর্তে ঋণ দিতে চাচ্ছে, তাদের যদি পজিটিভলি দেখি তাহলে আমরা হয়ত বিবেচনা করতে পারি। আমরা বিবেচনা করবই এ ধরনের কোনো প্রস্তাব আমরা দেইনি। আইএমএফসহ যাদের কাছ থেকে আমরা ঋণ নেই তারা সবাই জানে ঋণ গ্রহীতা হিসেবে আমাদের সুনাম রয়েছে। আমরা সময় মতো ঋণ পরিশোধ করি।

/হাসনাত/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়