ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আরএন স্পিনিংয়ের সাবেক পরিচালকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলার উদ্যোগ

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ২৩ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৮:৫৮, ২৩ নভেম্বর ২০২২
আরএন স্পিনিংয়ের সাবেক পরিচালকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলার উদ্যোগ

পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আরএন স্পিনিং মিলসের সাবেক পরিচালক কিম জং সুকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি)। সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্প্রতি কোম্পানিটির পাঁচজন পরিচালককে ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে কিম জং সুককে জরিমানা করা হয় ১০ লাখ টাকা। জারিমানা পরিশোধ না করায় তার বিরুদ্ধে সরকারি দাবি আদায় আইন, ১৯১৩ এর বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএসইসি।

সম্প্রতি ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জেনারেল সাটিফিকেট অফিসারের কাছে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন জানানো হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

বিএসইসির আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আরএন স্পিনিং মিলসের পরিচালক কিম জং সুক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২সিসি এর অধীনে ২০০৯ সালের ৫ অক্টোবর জারি করা নির্দেশনার শর্ত ৬ এর বি, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকসন ১৮ এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২সিসি এর অধীনে ২০০৯ সালের ৫ অক্টোবর জারি করা নির্দেশনার শর্ত ১৩ ও ১৬ লঙ্ঘন করেছেন। এসব আইন লঙ্ঘনের কারণে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২২ মোতাবেক কমিশন কর্তৃক বর্ণিত ব্যক্তির ওপর ১০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। জরিমানা পরিশোধ না করায় তা আদায়ের লক্ষ্যে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করার নিমিত্তে এ সংক্রান্ত রিকিউজিশন প্রেরণ করা হলো।

আবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, বর্ণিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি সার্টিফিকেট মামলা আমলে নিয়ে সরকারি পাওনা হিসেবে দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা সরকারি দাবি আদায় আইন, ১৯১৩ এর বিধান অনুযায়ী আদায়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হলো।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জুনে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে সংগৃহিত অর্থের ব্যবহারে অনিয়ম, বিপুল পরিমাণ অর্থ নগদ লেনদেন এবং একই গ্রুপের বিভিন্ন কেম্পানির মধ্যে লেনদেন সংক্রান্ত তথ্যাদি দেখাতে না পারায় আরএন স্পিনিং মিলসের পাঁচজন পরিচালককে ১ কোটি টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন—আরএন স্পিনিং মিলসের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর (অব.)  একেএম হাফিজ আহমেদ, পরিচালক কিম জং সুক, শিরিন ফারুক ও আব্দুল কাদের ফারুক।

তথ্য মতে, ২০১২ সালে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে সংগৃহিত অর্থ রাইট অফার ডকুমেন্টসে (আরওডি) উল্লিখিতভাবে ব্যবহার করেনি। কিন্তু, এমনটি করার আগে বিএসইসির ও বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন লাগে। তা না করেই আরএন স্পিনিং কর্তৃপক্ষ সিভিল ওয়ার্কের জন্য রাইট অফার ডকুমেন্টসে উল্লিখিত ১৫ কোটি টাকার পরিবর্তে ৩৩ কোটি টাকা ব্যবহার করেছে। এক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর ধারা ২সিসি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এছাড়া, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে রাইট ইস্যুর ৫৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা নগদে ব্যবহার করেছে। অথচ, ১ লাখ টাকার ওপরে নগদে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই ডিমান্ড ড্রাফট/পে অর্ডার/ক্রস চেকের মাধ্যমে লেনদেন বাধ্যতামূলক। তা না করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর ধারা ২সিসির ১৩ নং শর্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে। ফলে, সার্বিক দিক বেচনা করে আরএন স্পিনিং মিলসের পরিচালক আব্দুল কাদের ফারুককে ৬০ লাখ টাকা এবং বাকি ৪ পরিচালককে ১০ লাখ করে ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে আরএন স্পিনিং মিলস তালিকাভুক্ত হয় ২০১০ সালে। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। কোম্পানিটির মোট পরিশোধিত মূলধন ৩৯২ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার ৩৯ কোটি ২৫ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৪টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৩০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১১.৮২ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে ০.০৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫৯.১৪ শতাংশ শেয়ার আছে। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য মাত্র ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। এরপর থেকে টানা তিন বছর ধরে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। বুধবার (২৩ নভেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৬.২০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

এনটি/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়