ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মুনাফা করেও লভ্যাংশ না দেওয়ায় গছিহাটার ব্যাখ্যা তলব

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪০, ১০ ডিসেম্বর ২০২২  
মুনাফা করেও লভ্যাংশ না দেওয়ায় গছিহাটার ব্যাখ্যা তলব

পুঁজিবাজারের ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে থেকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরের অপেক্ষায় থাকা গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস লোকসান কাটিয়ে গত হিসাব বছরে ১৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তারপরও কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এ কারণে কোম্পানিটির কাছে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ ব্যাখ্যা তলব করেছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সম্প্রতি গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মসের লভ্যাংশ না দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরেই বিষয়টি বিএসইসির নজরে আসে। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কমিশন।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া সংবাদে উল্লিখিত সমস্যাগুলোর বিষয়ে গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মসকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ১১(২) এর অধীনে কমিশনের কাছে তথ্য ও নথির সঙ্গে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। এই চিঠি জারির পর থেকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে  প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়, গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস লোকসান কাটিয়ে বড় মুনাফায় ফিরেছে। ২০২১ সালে কোম্পানিটি প্রায় ১৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এর পরেও কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এর আগে বেশ কয়েক বছর লোকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর অভিযোগও উঠেছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। ২০২১ সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৬৭২ টাকা ৬৭ পয়সা। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয় ১৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ৪৩৭ টাকা। এদিকে ২০২০ সালে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৮৪ টাকা ৭৭ পয়সা। ওই বছর কোম্পানিটি সর্বমোট ১৭ কোটি ৫৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫২৭ টাকা লোকসান দিয়েছে। এছাড়া, বেশ কয়েক বছর ধরে কোম্পানিটি লোকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তথ্য মতে, পুঁজিবাজারের ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস পুনরায় ব্যবসা শুরু করার কথা জানিয়েছে। চলতি বছরের গত ১০ আগস্ট কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি। কোম্পানিটি ২০২০ সালে ১৭ কোটি টাকা লোকসান করলেও ২০২১ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে মুনাফা দেখায় প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, গাছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত একটি কৃষিভিত্তিক কোম্পানি। ১০৯ একর জমির মালিকানা থাকা সত্ত্বেও কার্যকরী মূলধনের ঘাটতির কারণে দুই দশক ধরে খারাপ অবস্থায় আছে কোম্পানিটি। ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল গাছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার। ২০০২ সাল থেকে কার্যকরী কার্যক্রম পরিচালনা এবং লভ্যাংশ প্রদান করতে ব্যর্থ হওয়ায় স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান ট্রেডিং বোর্ড থেকে ওটিসি মার্কেট পাঠানো হয়।

পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসি ওটিসি মার্কেট বিলুপ্ত ঘোষণা করে। ফলে ওটিসি মার্কেটের আওতাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও ভবিষ্যত সম্ভাবনার ভিত্তিতে এসএমই প্ল্যাটফর্ম ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে ওটিসি মার্কেট থেকে গাছিহাটা অ্যাকুয়াকালচারকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।

প্রসঙ্গত, গাছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস ১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৭ লাখ। এর মধ্যে কোম্পানির উদ্যোক্তা এবং পরিচালকদের হাতে ২৫.৮৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৮.১২ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হাতে ৫৬.০২ শতাংশ শেয়ার আছে। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৮ টাকায়।

এনটি/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়