ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বানকোর আটক চেয়ারম্যান মুহিতকে আদালত নেওয়া হবে বুধবার

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ২৯ জুন ২০২১  
বানকোর আটক চেয়ারম্যান মুহিতকে আদালত নেওয়া হবে বুধবার

বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত

বিনিয়োগকারীদের ‘সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্ট’ থেকে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিতকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) রাতে তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের হেফাজত থেকে দুদক কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

তাকে মঙ্গলবার রাতে রমনা মডেল থানার হেফাজতে রাখা হবে। বুধবার (৩০ জুন) তাকে  প্রতারণামূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তোলা হবে।

মঙ্গলবার সকালে দেশ ত্যাগের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। ওই সময় বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে দেশ ত্যাগে বাধা দেয় এবং তাকে আটকে রাখে। পরবর্তীতে বিষয়টি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) অবহিত করে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ।

এ ঘটনার পর সকালেই মামলাটির (মামলা নম্বর- ১৯) ওয়ারেন্ট ইস্যুর জন্য দুদককে তাগাদা দেয় ডিএসই।  বিকালে দুদক ওয়ারেন্ট নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে যায়। সেখান সকল হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষে করে বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিতকে নিয়ে রাত ৮টার দিকে দুদক কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ১০টার দিকে তাকে রমনা মডেল থানার কাস্টডিতে দেওয়া হয়। বুধবার (৩০ জুন) সকালে তাকে সিএমএম) আদালতে তোলা হবে। শুরু হবে তার বিচার কার্যক্রম।  আদলত চাইলে মামলাটি দুদকের বিশেষ আদালতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পাঠাতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) আব্দুল মতিন পাটোয়ারী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে, বানকো সিকিউরিটিজের আটক চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিতকে দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বুধবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।'

বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে বানকো সিকিউরিটিজ ও তার ৭ জন পরিচালকের বিরুদ্ধে ১৪ মে মতিঝিল থানায় অভিযোগ দায়ের করে ডিএসই। পরের দিন ১৫ জুন সকালে মতিঝিল থানা অভিযোগটি দুদকে হস্তান্তর করে।

অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ডিএসইর পক্ষে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৬ মে ও ৬ জুন বানকো সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়। পরে গত ৭ জুন কোম্পানিটিতে বিশেষ পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে ডিএসই। ওই সময় ব্রোকারেজ হাউজটির সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের ৬ জুনের হিসাবে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকার ঘাটতি পায় ডিএসই। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে ডিএসই কোম্পানির কাছ থেকে ওই সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টের ঘাটতির ‘গ্রাহকের পরিশোধযোগ্য সমন্বয়সাধন বিবরণ’ গ্রহণ করে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, বানকো সিকিউরিটিজ ও তাদের মালিকপক্ষ বিনিয়োগকারীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও শেয়ার আত্মসাত করেছে। এ অর্থ সমন্বয় না করেই তাদের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কোম্পানিটির এমন কর্মকাণ্ড শেয়ারবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। পাশাপাশি, সাধারণ বিনিয়োগকারীকে তাহাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত করে তুলেছে।

বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস ভঙ্গ করে তাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করে বানকো সিকিউরিটিজের পরিচালক ও কর্মকর্তা/কর্মচারীরা অপরাধ করেছেন। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ও শেয়ারবাজারের শৃঙ্খলার রক্ষায় ডিএসই বানকো সিকিউরিটিজসহ কোম্পানিটির চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত, পরিচালক মো. শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশাণ সাদাত, এ মুনিম চৌধুরী, জামিল আহমেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪০৯ ধারায় প্রতারণামূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অর্থ আত্মসাতকারীরা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য ডিএসইর অনুরোধে গত ১০ জুন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়া, ব্রোকারেজ হাউজটি যেন বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি করতে না পারে সে বিষয়ে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকেও (সিডিবিএল) নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ঢাকা/এনটি/এমএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়