ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

পাবলো পিকাসো ও গোয়ের্নিকা

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৭, ৮ এপ্রিল ২০২২   আপডেট: ১০:৩৬, ৮ এপ্রিল ২০২২
পাবলো পিকাসো ও গোয়ের্নিকা

বিশ্ব বিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো নামটা কে না জানে। তার আঁকা ‘গোয়ের্নিকা’ আজো সেরাদেরও সেরা ছবি হিসেবে গণ্য। আজ এই ‘গোয়ের্নিকা’ স্রষ্টার প্রয়াণ দিবস। 

১৯৭৩ সালের ৮ এপ্রিল তিনি ফ্রান্সের মুগা শহরে মারা যান। তার আগে ১৯৭০ সালে তিনি নিজের সমস্ত শিল্পকর্ম স্পেনের বার্সেলোনার মিউজিয়ামকে দান করে যান। মাতৃভূমির প্রতি এই ছিল তার শেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য। কেবল সৃষ্টির উৎকর্ষতা নয়, তার সৃষ্টির পরিমাণও ছিলো বিস্ময়কর। তিনি ১৫০০ ক্যানভাস, ১০০০০ লিথো প্রিন্ট, ৩০০ ভাস্কর্য সিরামিক মাটির কাজ ও ৩৫০০০ ছোট ছোট ছবি দান করেছিলেন।   

তার জন্ম ১৮৮১ সালের ২৫ অক্টোবর স্পেনের দক্ষিণ উপকূলে কাতালান প্রদেশের মালগা শহরে। 

তার নামকরণও ছিল আরেকটি ইতিহাস। বাবা ডন জোস রুইজ ব্লাসকো ছিলেন আর্ট স্কুলের শিক্ষক এবং শহরের একটি মিউজিয়ামের কিউরেটর। বিয়ের এক বছর পরেই পিকাসোর জন্ম। ডন জোস ছেলের নাম রাখলেন পাবলো নেপোমুসেনা দ্য লা সান্তিমাসসিমা ত্রিনিদাদ রুইজ পিকাসো। কিন্তু এই বিশাল নাম ধরে ডাকা কারোর পক্ষেই সম্ভব ছিল না । তাই সংক্ষেপে ডাকা হত পাবলো রুইজ। রুইজ ছিল তার পিতার পদবি, পিকাসো মাতৃকুলের পদবি । বড় হয়ে পিতৃকুলের পদবি বর্জন করে শিল্পী নিজের নাম রাখলেন পাবলো পিকাসো। আর এ নামেই তিনি জগৎবিখ্যাত ।

তার চিত্রকর্ম ‘গোয়ের্নিকা’ সম্পর্কে বলা হয়- যত দিন মানুষ, স্বাধীনতার স্পৃহা, অগ্রগামী চিন্তাচেতনা বেঁচে থাকবে, ততদিন গোয়ের্নিকা বেঁচে থাকবে। অবশ্য স্পেনের গৃহযুদ্ধ নিয়ে তার আরেকটি বিশ্বখ্যাত শিল্পকর্ম হচ্ছে ‘দেমোইসেল্লেস দ্য’অ্যাভিগনন’।  

‘গোয়ের্নিকা’ চিত্রটির পটভূমি হচ্ছে স্পেনের ব্যস্ক কান্ট্রির গোয়ের্নিকা নামক শহরটিতে স্প্যানিশ সিভিল ওয়ারের সময় জার্মান ও ইতালিয়ান যুদ্ধবিমানের বোমাবর্ষণ। স্প্যানিশ ন্যাশনালিস্টদের কমান্ডেই তারা এই বোম্বিংটা করে। গোয়ের্নিকা ছিল রিপাবলিকান চেতনা ও ব্যঙ্গ সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। তাই ন্যাশনালিস্টরা এই শহর ধ্বংসের জন্য উন্মত্ত ছিল।

এই ঘটনার ক্ষোভে দুঃখে ফেটে পড়লেন পিকাসো। স্পেনের সরকারের তরফে তাকে বহু সম্মান খেতাব দেওয়া হয়েছিল। তিনি ছিলেন মাদ্রিদ আর্ট কলেজের ডিরেক্টর । সব কিছুকে ঘৃণায় প্রত্যাখ্যান করে তিনি অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে তুলি ধরলেন । তার ছবি ’গোয়ের্নিকা’ হয়ে উঠল এক জ্বলন্ত প্রতিবাদ।  ছবিটি ১১ ফুট চওড়া, লম্বায় ২৬ ফুট । এই বিশাল ছবিটি আঁকতে তার সময় লেগেছিল সাত সপ্তাহ । কালো সাদা ধূসর রঙে আঁকা ছবি আধুনিক চিত্রশিল্পের জগতে এক অনন্য সৃষ্টি হয়েই রইলো ।

ঢাকা/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়