ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

অতুল প্রসাদের ১৫২তম জন্মদিন

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৩, ২০ অক্টোবর ২০২২  
অতুল প্রসাদের ১৫২তম জন্মদিন

‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা!/ মাগো তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালবাসা!’ বাংলা গানের শুকতারা অতুল প্রসাদ সেনের ১৫২তম জন্মদিন আজ। গানের জন্য অতুলপ্রসাদ নামটি অনেক মনেই শুকতারার মতো জ্বলজ্বলে।  অমর গানের রচয়িতা অতুল প্রসাদ সেন তার সৃষ্টির জন্যই চিরকাল বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে রইবেন।

সংগীতের এই সাধকের জন্ম ১৮৭১ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকায় তারই মাতুলালয়ে।  পৈতৃক বাড়ি ছিল দক্ষিণ বিক্রমপুর।  বাবার নাম রামপ্রসাদ সেন এবং মায়ের নাম হেমন্ত শশী।

অতুলপ্রসাদ অতি অল্প বয়সেই বাবাকে হারান।  এরপর মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের কাছে প্রতিপালিত হন।  ১৮৯০ সালে তিনি ব্যারিস্টারি পড়তে বিলেত যান।  বিলেত যেতে যেতে জাহাজে বসে তিনি লিখেছিলেন ‘উঠ গো ভারতলক্ষ্মী’ গানটি।  লন্ডনে গিয়ে তিনি আইন শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং আইন পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হন।  

১৮৯৪ সালে দেশে ফিরে এসে আইন ব্যবসা শুরু করেন।  ১৮৯৭ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রস্তাবে ‘খামখেয়ালী সভা’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  এই সভায় যাওয়া-আসা ছিল অতুলপ্রসাদের।  রবীন্দ্রনাথ ছাড়াও এই আসরে উপস্থিত থাকতেন বাংলা সংগীতের আরেক কিংবদন্তি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়।  এই আসর হাস্যরসাত্মক গান ছাড়াও রাগসংগীতের মতো উচ্চাঙ্গের গান হতো।

ছোটবেলায় ঢাকা ও ফরিদপুরে বাউল, কীর্তন ও মাঝি-মাল্লাদের ভাটিয়ালি গানের মূর্ছনা অতুলপ্রসাদের হৃদয়ে স্থায়ী আসন লাভ করেছিলো।  সে সুরের অভিজ্ঞতার আলোকে রচিত তার বাউল ও কীর্তন ঢঙের গানগুলোতে বাংলার প্রকৃতিকে খুঁজে পাওয়া যায়। অতুলপ্রসাদ প্রেম, ভক্তি, ভাষাপ্রীতি, দেশপ্রেম প্রভৃতি বিষয়ভিত্তিক বহু গান রচনা করেছেন।

১৯১৬ সালে লক্ষ্ণৌতে সর্বভারতীয় কংগ্রেস অধিবেশনে স্বেচ্ছাসেবকদের অধিনায়ক হিসেবে তিনি রচনা করেন- ‘দেখ মা এবার দুয়ার খুলে/ গলে গলে এল মা/ তোর হিন্দু-মুসলমান দু ছেলে’। 

‘মোদের গরব, মোদের আশা/ আ মরি বাংলা ভাষা’ গানটিতে অতুলপ্রসাদের মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ ফুটে উঠেছে।  এ গান বাংলাদেশের  ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের মধ্যে অফুরন্ত প্রেরণা জুগিয়েছে।  এভাবে বাণীপ্রধান গীতি রচনা ও সুরারোপের মাধ্যমে অতুলপ্রসাদ বাংলা সংগীতভাণ্ডারকে ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ করে গেছেন।

অসম্ভব দানশীল অতুলপ্রসাদ জীবনের উপার্জিত অর্থের অধিকাংশই ব্যয় করেছিলেন জনকল্যাণে। এমন কী তিনি তার বাড়িটিও দান করে গিয়েছিলেন।  মৃত্যুর আগে তিনি তার লেখা সমস্ত গ্রন্থের স্বত্ব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে দান করে যান।

ঢাকা/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়