ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অবাক লাগে যখন বলে, ‘নারী দিবস আছে, পুরুষ দিবস নাই কেন?’

জেলা প্রতিনিধি, চাঁদপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৯, ৮ মার্চ ২০২৩   আপডেট: ১৭:০১, ৮ মার্চ ২০২৩
অবাক লাগে যখন বলে, ‘নারী দিবস আছে, পুরুষ দিবস নাই কেন?’

চাঁদপুরের সফল নারী উদ্যোক্তা তানিয়া ইসলাম। তিনি কাজের লভ্যাংশ ব্যয় করেন স্বাস্থ্যসেবা, বস্ত্র বিতরণ, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, নির্যাতিত নারীদের প্রশিক্ষণ এবং উদ্যোক্তা তৈরির কাজে। 

৮ মার্চ বুধবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আয়েশা আক্তারের মুখোমুখি হলে তিনি বলেন, আমাকে পড়ালেখা চলাকালীন অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় পরিবার বিয়ে দেয়। পরে বিবাহিত জীবনে জানতে পারি আমার স্বামী কঠিন রোগে আক্রান্ত। পরে তার চিকিৎসার খরচও আমাকে জোগাতে হতো। হতাশাময় সে সময় আমি খোঁজ পাই ‘সবাই মিলে’ প্রতিষ্ঠানের। যার মাধ্যমে আমি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন উদ্যোক্তা হয়েছি। বর্তমানে আমি সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি।

নিলুফা আক্তারও একইভাবে বলেন, মাদকাসক্ত লোকের সাথে পরিবার বিয়ে দিয়েছিল। এরপর জীবনে একের পর এক দুর্যোগ নেমে আসে। সে অবস্থা থেকে ‘সবাই মিলে’র মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেই। এরপর ব্লক বাটিকের কাজ শুরু করে উদ্যোক্তা হই। 

নিলুফা আক্তার এখন স্বাবলম্বী। বর্তমানে তিনি প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন।  

এই প্রতিষ্ঠানের ফৌজিয়া রহমান মাসফি বলেন, আমি একজন স্বপ্নবাজ। তাই সবাই মিলে প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেই। এরপর এখন নিজে কাপড়ের শপিং ব্যাগ তৈরি করে বিক্রি করে স্বপ্ন পূরণে উদ্যোক্তা হয়েছি। এখন আমি সাবলম্বী হওয়ার পথে রয়েছি।

একইভাবে এই প্রতিষ্ঠানের মালিহা ইসলাম, তানজিলা জারাসহ অন্যান্যরাও নিজেদের হতাশাগ্রস্ত জীবন থেকে বেরিয়ে এসে এখন উদ্যোক্তা হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত। 

এদিকে নারী দিবসকে কেন্দ্র করে এক সাক্ষাৎকারে সবাই মিলে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ও নারী উদ্যোক্তা তানিয়া ইসলাম বলেন, একটা দেশে নারী দিবসের প্রয়োজনীয়তাকে যখন তাচ্ছিল্যের চোখে দেখা হয়, তখনই বোঝা যায় এ দেশে নারী অধিকার কতটুকু নিশ্চিত। সবচেয়ে বেশি অবাক লাগে যখন কেউ বলে, নারী দিবস আছে, পুরুষ দিবস নাই কেন? সামাজিক মাধ্যমে এসব কমেন্টই হলো নারীদের দুর্দশা সম্পর্কে অজ্ঞতার প্রকাশ। আমি মনে করি, নারী দিবস উদযাপন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বিভিন্ন অফিস এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। কারণ, কর্মজীবী অনেকে আছেন, যাদের বাইরের মেয়েদের প্রতি এক রকম আচরণ, আর নিজের পরিবারের মেয়েদের সাথে অন্যরকম। তাদের মানসিকতার পরিবর্তনে নারী দিবস উদযাপন ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। আমি যেন ‘সবাই মিলে’ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ওদের সঙ্গে নিয়ে সমাজে এগিয়ে যেতে পারি এজন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাচ্ছি।

অমরেশ/তারা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়