ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

১৩তম প্রয়াণ দিবস আজ

খেটে খাওয়া মানুষের কণ্ঠস্বর, ভূপেন হাজারিকা

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৬, ৫ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১১:২০, ৫ নভেম্বর ২০২৩
খেটে খাওয়া মানুষের কণ্ঠস্বর, ভূপেন হাজারিকা

কিংবদন্তি গায়ক ভূপেন হাজারিকার পড়াশুনা গুয়াহাটি, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় আর কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমেরিকায় পরিচয় কিংবদন্তী শিল্পী পল রবসনের সঙ্গে, যাঁর অনেক বিশ্ববিখ্যাত গানের ভারতীয় রূপান্তর করেছেন ভূপেন। অহমীয়া লোক সঙ্গীতের আধারে একের পর এক গান লিখেছেন, সুর করেছেন, যুক্ত হয়েছেন বামপন্থী গণনাট্য আন্দোলনে– যার ফলে ভূপেন হাজারিকার গানে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ সবসময়েই গুরুত্ব পেয়েছে।

এই কিংবদন্তি শিল্পীর ১৩তম প্রয়াণ দিবস আজ। তিনি প্রয়াত হন ২০১১ সালের ৫ নভেম্বর ৮৬ বৎসর বয়সে।  ১৯২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আসামের সাদিয়া গ্রামে এক শিক্ষক পরিবারে জন্ম তার। 

একাধারে তিনি ছিলেন গীতিকার, সুরকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। আসামে যতটা জনপ্রিয় তিনি, ততটাই তাঁর গানকে ভালবাসতেন বাংলাভাষীরাও। তাই বাংলাকে একের পর এক অসাধারণ গান উপহার দিয়ে গেছেন তিনি।

‘মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য’, ‘আজ জীবন খুঁজে পাবি রে..  ছুটে ছুটে আয়’, ‘ও মালিক সারা জীবন কাঁদালে যখন এবার মেঘ করে দাও’- গানে গানে এমন আকুতির কথা ছিলো বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী ভূপেন হাজারিকার। 

বিষয় ও বক্তব্যের কারণে তার দরদ ভরা গানগুলো সহজেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয়। যেমন-‘‘বিস্তীর্ণ দু’ পাড়ে’, ‘সাগর সঙ্গমে’, দোলা হে দোলা’, ‘প্রতিধ্বনি  শুনি’, ‘আমায় একটা সাদা মানুষ দাও’, ‘শরৎ বাবু খোলা চিঠি দিলেম তোমার কাছে’, ‘গঙ্গা আমার মা-পদ্মা আমার মা’, ‘জীবন নাটকের নাট্যকার কি বিধাতা পুরুষ’, ‘আমি এক যাযাবর’, ‘মোর গায়ের সীমানার পাহাড়ের ওপারে নিশিথ রাত্রির প্রতিধ্বনি শুনি’, ‘মোরা যাত্রী একই তরণীর সহযাত্রী একই তরণীর’-এমনই জীবন অনুসন্ধানী গান ছিল ভূপেন হাজারিকার। ভূপেনের গান মানুষকে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে উদ্দীপ্ত করেছে।

মন্ত্রমুগ্ধের মতো তার গানে আকৃষ্ট হয়েছেন শ্রোতারা। আসামিয়া, ফোক, বলিউড এবং আধুনিক গানকে তিনি জনপ্রিয় করেছেন। বাংলা ও হিন্দি দু’ভাষাতেই  আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা পায় ভূপেনের গান। বাংলাদেশের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্কের বাঁধন ছিল তার। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিয্দ্ধু চলাকালে এই শিল্পীর সঙ্গীত স্বাধীনতাকামী জনগণের মাঝে যে আশার  আলো জাগিয়েছিল তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।  মৃত্যুর কয়েক বছর আগে ঢাকায় এসেও ভক্ত শ্রোতাদের মাতিয়ে যান তিনি। 

বাংলাদেশে ভীষণ জনপ্রিয় ভূপেন হাজারিকা ১৯৭৩ সালে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ নামে যৌথ প্রযোজনায় ছবিতে কণ্ঠ এবং ১৯৭৭ সালে ‘সীমানা পেরিয়ে’ ছবির সংগীত  পরিচালনা করেন। এ চলচ্চিত্রের বিখ্যাত গান ‘মেঘ থম থম করে’ এখনও সবার মুখে মুখে। 

ভূপেন শুধু গায়ক ছিলেন না, ছিলেন একজন মহান সমাজসংস্কারকও। 

/টিপু/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়