ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মৃতদেহ সৎকার করেন যে নারী

সাতসতেরো ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩০, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৫:৩৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মৃতদেহ সৎকার করেন যে নারী

টুম্পা দাস। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক নারী টুম্পা দাস। ২০১৪ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়স থেকে মৃতদেহ সৎকার করার কাজ শুরু করেন। এরপরে চারপাশের মানুষগুলোকে বদলে যেতে দেখেন তিনি। মৃতদেহ সৎকার করার মতো পেশায় থাকার জন্য টুম্পার হাতের পানিও অনেকে পান করতে চাননি এমনকি চলতি পথে তাকে দেখলে অনেকে উল্টো পথে যেতে শুরু করতেন। কিন্তু নিজের পেশা ছাড়েননি টুম্পা। 

টুম্পা দাসের বাবা মৃতদেহ সৎকারের কাজ করতেন। মেয়েকে শ্মশানে আনতে চাইতেন না। টুম্পা দাস লুকিয়ে একদিন মৃতদেহ সৎকার করা দেখেন এবং ভয় পেয়ে যান। ধীরে ধীরে বুঝতে শেখে আর ভয় কাটিয়ে ওঠেন।

আরো পড়ুন:

শান্ত চেহারার এক নারী টুম্পা। কিন্তু তার সাহসের অভাব নেই। যখন কেউ ভাবতেই পারেননি মেয়ে হয়ে এই কাজ করতে পারবেন, টুম্পা দাস সেই কাজটি করে দেখিয়েছেন। প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছেন টুম্পা। পুরন্দরপুর মহাশ্মশানে কাজ করেন তিনি। কখনও কখনও লোকের অভাবে একাই ২৪ ঘণ্টা কাজ করেছেন। মাসের পর মাস কোনো ছুটিও পাননি তিনি। 

টুম্পা বলেন, ‘‘লোক কম থাকলে আমি প্রথমে অফিসে রেজিস্ট্রেশনের কাজ করেছি আর তারপর চিতা সাজিয়েছি। মা দেখিয়ে দিয়েছে, ঠিক যেভাবে বাবা সাজাত।’’

টুম্পা দাস আরও বলেন, ‘‘এখন বুঝেছি, ভয় পেলে বাঁচতে পারব না। লোকের কথায় কান দিলে বাঁচতে পারব না। আমার ওপর সংসার নির্ভর করছে।’’

মাধ্যমিক পাশ করার পর প্রথমে টেইলরিং এবং পরে নার্সিং ট্রেনিং নিয়েছিলেন টুম্পা। বাবাকে হারিয়ে মাত্র  তিন হাজার  টাকা বেতনে মৃতদেহ সৎকারের কাজ শুরু করেন।  

তিনি বলেন, ‘‘সত্যি বলতে কী বাবাকে হারানোর ছয়মাসের মধ্যে শ্মশানে কাজ করতে কষ্ট হতো। অন্যদের কাঁদতে দেখে খুব খারাপ লাগত। বাবাকে মিস করতাম। কিন্তু তাদের সামনে শক্ত থাকতাম।’’ 

ঐতিহাসিক ও পুরাণ বিশারদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী জানিয়েছেন, হিন্দু শাস্ত্রে কিন্তু নারীদের এই কাজ করতে বাধার কথা কোথাও লেখা নেই।

সূত্র: বিবিসি

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়