ঢাকা     শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২১ ১৪৩১

সেন্ট মথুরানাথ বোস গোপালগঞ্জের আলোর দূত

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সেন্ট মথুরানাথ বোস গোপালগঞ্জের আলোর দূত

শিক্ষার অগ্রদূত,সেন্ট মথুরানাথ বোসের সমাধী সৌধ

বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ : সেন্ট মথুরানাথ বোস। আলোর দূত হয়ে ১৮৭৪ সালে গোপালগঞ্জে এসেছিলেন। তিনি ছিলেন এ অঞ্চলের শিক্ষার অগ্রদূত, সমাজ সংস্কারক ও ভাটির মানুষের আশার আলো। আজ ২ সেপ্টেম্বর এই মহান মানুষটির ১১৩তম মৃত্যুবাষির্কী।


প্রায় দেড়’শ বছর আগে গোপালগঞ্জে অঞ্চল ছিল জলাভূমি ও প্লাবণ এলাকা। এখানকার আদিবাসীদের প্রায় সবাই ছিল নিম্নবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। এরা ছিল অতিশয় গরীব ও অশিক্ষিত। আঁধারে ঢাকা এ অঞ্চলে মুক্তির বার্তা পৌঁছে দিতে কলকাতার ভবানীপুরের লন্ডন মিশনারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার চাকরী ছেড়ে ১৮৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নৌকাযোগে গোপালগঞ্জ পৌঁছান।


শুরু করেন নিরক্ষর মানুষকে জাগিয়ে তোলার কাজ। গড়ে তোলেন শিক্ষাঙ্গণ, ভজনালয়, কোর্ট, পোষ্ট অফিস, হাইস্কুল, ব্যাংক, হাসপাতাল ও কৃষি খামার। গোপালগঞ্জের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীকে অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে আসতে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে থেকে হয়ে ওঠেন তাদের বন্ধু। অশিক্ষা আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই ছিল তার। গোপালগঞ্জবাসীর জন্য তিনি আশির্বাদ হয়ে এসেছিলেন।


মথুরানাথ বোস স্থাপিত এ অঞ্চলের প্রথম পাঠশালাটিই মিশন হাইস্কুল নামে পরিচিত। পরে তার নামানুসারে এমএন ইনস্টিটিউট রাখা হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ মিশন হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন। ১৯৪২ সালে বঙ্গবন্ধু এই মিশন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। স্কুলটি ১৯৫০ সালে কায়েদে আযম কলেজ ও  পরে বঙ্গবন্ধু কলেজ (বর্তমানে সরকারী বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ) নামকরন করা হয়।


এই মহান পুরুষ ১৯০১ সালের ২ সেপ্টম্বর ৫৮ বছর বয়সে পরলোক গমন করেন। যে মানুষটির আপ্রাণ চেষ্টায় গোপালগঞ্জে সভ্যতার বিকাশ, সেই মহাপ্রাণ সেন্ট মথুরানাথের নাম আজ গোপালগঞ্জবাসীর কাছে বিস্মৃত প্রায়। মহৎ এ মানুষটির সমাধি সৌধটি পড়ে আছে অযতœ আর অবহেলায়। সমাধি সৌধে যাওয়ার এমমাত্র রাস্তাটি রয়েছে ময়লা আর্বজনায় ভরা। জেলা প্রশাসকের কাছে বারবার স্মারকলিপি পেশ করলেও নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। এমনকি তার প্রতিষ্ঠিত স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা পর্যন্ত জানেনা তার নাম।


খ্রীষ্টিয়ান ফেলোশীপের সভাপতি স্যামুয়েল এস বালা জানান, সেন্ট মথুরানাথ বোসের ১১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে খ্রীষ্টিয়ান ফেলোশীপের উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচী। এর মধ্যে রয়েছে শোক র‌্যালি, সমাধিতে মাল্যদান, আলোচনা ও প্রার্থণা সভা এবং দুঃস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ।

 


রাইজিংবিডি/বগুড়া/২ সেপ্টেম্বর ২০১৪/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়