গাদ্দাফির গোপন রঙ্গ
রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম
গাদ্দাফির গোপন ডেরা। ইনসেটে গাদ্দাফি ও তার পোষ্য বাহিনী
ডেস্ক রিপোর্ট
ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি : লিবিয়ার স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির মৃত্যুর পর দুই বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। এ সময়ে তার সম্পর্কে নানা অজানা ও গোপন তথ্য বেরিয়ে এসেছে, যা রীতিমতো গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো।
হত্যা, খুন, ধর্ষণ এসব নাকি গাদ্দাফির রোজকার কাজ ছিল। তার ৪২ বছরের শাসনামলে তিনি কয়েক শ কিশোরীর কুমারীত্ব হরণ করেছেন। দিনের পর দিন যৌনদাসী করে রেখেছেন ডজন ডজন তরুণীকে।
২০১১ সালের অক্টোবরে ন্যাটো বাহিনীর হাতে গাদ্দাফির মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে সাংবাদিকরা অনেক অনুসন্ধানী ও গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এর আগে গাদ্দাফির বিকৃত যৌনাচার নিয়ে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
কিন্তু এবার ডেইলি মেইলের ওলগা ক্রেইক ও নিক্কি মারফিট গাদ্দাফির গোপন রঙ্গ নিয়ে যে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, তা পিলে চমকানোর মতোই। এ থেকে গাদ্দাফির নিষ্ঠুরতার দিকটি আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ক্রেইগ ও মারফিট জানাচ্ছেন, গাদ্দাফির যৌনজীবন ছিল হায়েনার মতো হিংস্র। তরুণীদের প্রতি তার টার্গেট ছিল বাঘের মতো। যাকে পছন্দ হতো তাকেই হতে হতো তার গোপন রঙ্গের সঙ্গী। কেউ অস্বীকৃতি জানালে তাকে ভোগ করতে হতো ভয়ংকর শাস্তি।
গাদ্দাফি ছিলেন বহুগামী। ১৪ বছরের কাছাকাছি তরুণদের প্রতিও তিনি আসক্ত ছিলেন। তার যৌনলিপ্সার শিকার বেশ কয়েকজন তরুণের সন্ধান পাওয়া গেছে, যাদের মুখে উঠে এসেছে গাদ্দাফির হারেমখানার বর্ণনা।
ক্রেইগ ও মারফিট জানাচ্ছেন, গাদ্দাফির বলদর্পী বাহিনী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তরুণীদের অপহরণ করে হারেমখানায় আটকে রাখত। বিশেষ করে, রাজধানী ত্রিপোলির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তরুণী অপহরণের ঘটনা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক। অপহৃত এসব তরুণীকে হারেমখানায় নিয়ে মেডিকেল টেস্ট করানো হতো।
মেডিকেল টেস্টের জন্য হামেরখানার এক কক্ষে স্থাপন করা হয় গাইনোকোলজিক্যাল পরীক্ষাগার। যৌনবাহিত রোগ-জীবাণু পরীক্ষার পর তাদের সঙ্গে রঙ্গে যেতেন গাদ্দাফি। এ জন্য হারেমখানায় ছিল ডাবল বেডের ব্যবস্থা, যা ইচ্ছানুযায়ী ৭০টি ভিন্ন ভিন্ন স্টাইলে বিন্যাস করা যেত। আর সেখানে গাদ্দাফির হীন বাসনার শিকার হতো অসহায় তরুণ-তরুণীরা।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি লিবিয়ার লৌহমানব হিসেবে বিশ্বে সমধিক পরিচিত। কিন্তু লৌহমানবের চেহারা এতটা ভয়ংকর হতে পারে, তা অনেকেরই হয়তো জানা ছিল না।
গাদ্দাফির মৃত্যুর পর তার যৌনডেরা ২৬ মাস তালাবদ্ধ ছিল। বিবিসি-৪-এর তথ্যচিত্র থেকে প্রথমবারের মতো ওই গোপন ডেরা সম্পর্কে মানুষ জানতে পারে। এরপর অন্য গণমাধ্যমের কর্মীরা ভিড় জমান সেখানে।
বাইরে থেকে দেখলে গাদ্দাফির যৌনডেরা একতলাবিশিষ্ট একটি সাধারণ বাড়িই দেখায়। কিন্তু ভেতরে নির্যাতনের যত কৌশল-কল পাতানো রয়েছে।
শুধু নিজ দেশে নয়, বিদেশেও ছিল গাদ্দাফির যৌনডেরা, যেখানে তিনি প্রভাবশালী বিদেশি বন্ধুদের নিয়ে রঙ্গ করতেন। ব্যয় করতেন রাষ্ট্রীয় কোষাগারের কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। আর এ কাজে তার ছিল রাষ্ট্রীয় পোষ্য বাহিনী, বিশেষ করে নারী নিরাপত্তাকর্মী। এসব নিরাপত্তাকর্মীও গাদ্দাফির লালসার শিকার হতো, অবশ্য যদি তিনি চাইতেন।
উল্লেখ্য, ‘গাদ্দাফির গোপন বিশ্ব’ (সিক্রেট ওয়ার্ল্ড অব গাদ্দাফি) শিরোনামে ৩ ফেব্রুয়ারি বিবিসি-৪ গাদ্দাফির যৌনজীবন নিয়ে বিস্তারিত তথ্যচিত্র প্রচার করবে।
রাইজিংবিডি / রাসেল পারভেজ/ আবু
রাইজিংবিডি.কম