ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

দুটি বিয়ে নিয়ে বিক্ষোভ কাশ্মিরে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২১, ১ জুলাই ২০২১   আপডেট: ২২:২৩, ১ জুলাই ২০২১
দুটি বিয়ে নিয়ে বিক্ষোভ কাশ্মিরে

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে দুই মুসলিম পুরুষের সঙ্গে দুই শিখ নারীর বিয়ে নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। শিখ সম্প্রদায়ের দাবি, জোর করে ধর্মান্তরের মাধ্যমে এই বিয়ে হয়েছে। তবে পুলিশ ও ওই পুরুষদের পরিবার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। অবশ্য এতেও বিক্ষোভ থামছে না কাশ্মিরে।

পরিবারের সদস্য ও পুলিশ জানিয়েছে, ১৯ বছরের মানমিট কাউর ও ২৯ বছরের শহিদ নাজির কাশ্মিরের প্রধান শহর শ্রীনগরের বাসিন্দা। গত ২১ জুন তারা দুজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে কাউরের পরিবারের সদস্যরা অপহরণের মামলা করে। ২৪ জুন দুজন বাড়ি ফিরলে তাদের থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। দুদিন পর পুলিশের কাছে দেওয়া বিবৃতিতে মানমিট দাবি করেন, তাকে অপহরণ করা হয়নি। তিনি ইসলামি পদ্ধতিতে বিয়ে করেছেন এবং নিজের নাম পরিবর্তন করে জয়া রেখেছেন। আদালতেও একই সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তিনি। পরে আদালত তাকে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে। ২৭ জুন কয়েকশ শিখ বিক্ষোভ করে। তাদের অভিযোগ,  জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছিল শিখ তরুণীকে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকশ বছর ধরে পাশাপাশি বাস করে আসা শিখ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

দ্বিতীয় ঘটনাটি ২৯ বছরের শিখ তরুণী দানমিত কৌরকে নিয়ে। স্কুলজীবনের সহপাঠী ২৯ বছরের মুসলিম তরুণ মুজাফফর শাবানের সঙ্গে তার ১৫ বছরের প্রেমের সম্পর্ক। ২০১৪ সালের জুনে শাবানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

টেলিফোনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘আমি ২০১২ সালে ইসলাম গ্রহণ করি, সেটা আমার প্রেমিককে বিয়ে করার দুই বছর আগের ঘটনা। আমাদের দুজনের ইচ্ছাতেই এটা হয়েছে। কেউ আমাদের জোর করেনি। এটা আমার সিদ্ধান্ত ছিল, কারণ ভারতীয় সংবিধান আমাকে জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার দিয়েছে।’

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতোকোত্তর দানমিত গত ৬ জুন বাড়ি ছেড়ে চলে যান। যাওয়ার আগে তিনি পরিবারের সদস্যদের বলে যান, তাকে যেন খোঁজা না হয়। তিনি তার স্বামীর সঙ্গে বাস করতে যাচ্ছেন।

তবে পরিবারের সদস্যরা সেই কথায় কান দেয়নি। তারা থানায় গিয়ে অভিযোগের দুই ঘণ্টার মাথায় দানমিত ও শাবানকে আটক করা হয়। শাবানের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ আনা হয়, আর দানমিতকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ভিন্নধর্মের এই দুটি বিয়ে নিয়ে কাশ্মিরে বিক্ষোভ চলছে। একের পর এক সংবাদ সম্মেলনে করে যাচ্ছে শিখ সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতারা। কিছু শিখ নেতা এমনও দাবি করছেন যে, বন্দুক ঠেকিয়ে শিখ নারীদের ধর্মান্তর করে বিয়ে করছে মুসলমানরা। অবশ্য এর পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা হাজির করতে পারেননি। এরপরও তারা ধর্মান্তর বিরোধী আইন চাইছেন এবং আন্তধর্মীয় বিয়ে বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন। এই দাবি নিয়ে সুদূর দিল্লি থেকে কাশ্মিরে ছুটে গেছেন শিখদের রাজনৈতিক দল শিরোমনি আকালি দলের নেতারা, যাদের মধ্যে দিল্লির সাবেক বিধায়ক মনজিনদার সিং সিরসাও রয়েছেন।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়