ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ট্রুডো হারলেন, ট্রুডো জিতলেন

শামছুল ইসলাম কবির, কানাডা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৭:৩৯, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
ট্রুডো হারলেন, ট্রুডো জিতলেন

আশা পূরণ হলো না জাস্টিন ট্রুডোর। স্বপ্ন সত্যি করার 'নির্বাচনি খেলায় 'হেরে গেছেন তিনি। অন্যে কোন দলের দয়ায় নয়, এককভাবেই সরকার গঠন করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভোটাররা তাকে নিরাশই করেছেন। অপ্রত্যাশিত নির্বাচনে আবার মাইনরিটি সরকারের ম্যান্ডেট দিলেও, মেজরিটি পেতে ব্যর্থ জাস্টিন ট্র্রুডো ও তার দল লিবারেল।

জনগণের পাশে থাকলেই আপনি যা ইচ্ছা করতে পারেন না-কানাডার ভোটাররা সেটাই বুঝিয়ে দিলেন গেলো সোমবারের ফেডারেল নির্বাচনে। ১৭০ নয়, ১৫৮ আসন নিয়েই টানা দ্বিতীয়বার মাইনরিটি সরকারের নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন জাস্টিন ট্রুডো। জয়ের পর হাস্যোজ্জ্বল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভোটাররা মুখ ফিরিয়ে নেননি। সামনে চাইল্ড, হেল্থ কেয়ারসহ বিভিন্ন খাতে আরো মনোযোগী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। 

করোনা মহামারীর পুরো সময় জনগণের পাশেই ছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ২০২০ এপ্রিলে লকডাউন ঘোষণার শুরু থেকেই জন কল্যানে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন। ২০১৯ সালে অন্তত ৫ হাজার ডলার আয় করেছেন, এমন তালিকাভুক্ত সবার একাউন্টে কানাডা সরকার মাসে ২ হাজার ডলার করে পাঠিয়ে দিয়েছে। সেই সেবা এখনো বন্ধ হয়নি।

গ্রীস্মের ছুটিতে প্রচুর ছাত্র, ছাত্রী কাজ করেন। তাদের বেশির ভাগেরই আয় ৫/৬ হাজার ডলারের বেশি হয়নি। করোনা যেন ছিল তাদের জন্য আর্শিবাদ! ঘরে বসে কোন কাজ না করেই একাউন্টে ডলার জমতে থাকায়, তাদের আকাশে উড়াটাই স্বাভাবিক। করোনা মহামারির এই সময়ে আরো অনেক ভাবে কানাডিয়ান নাগরিকদের সহযোগিতা দেয় সরকার। সরকারি তহবিল ক্রমশ স্বাস্থ্যহীন হলেও, কানাডাজুড়ে থাকা মধ্য,নিম্ন মধ্যবিত্তদের একাউন্টের স্বাস্থ্য  বেড়েছে ঠিকই। 

এসব কারণেই  হয়তো ট্রুডো আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। গত ১৫ আগস্ট মধ্যবর্তী নির্বাচনের ডাক দেন। সাথে সাথে প্রধান প্রতিপক্খ কনজার্ভেটিভসহ, নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি(এনডিপি),ব্লক কুইবেকওয়াসহ সবার সমালোচনার মুখে পড়েন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। করোনার চতুর্থ ওয়েভের সময় এই নির্বাচনকে জাস্টিন ট্রুডোর 'ব্যক্তিগত স্বপ্ন পূরণের নির্বাচন' হিসেবে সমালোচনা করতে থাকে বিরোধী পক্ষ। 

বিরোধী দলনেতা অ্যারন ও'টুল,এনডিপি নেতা জাগমিত সিং,ব্লকের ইভ ফ্রাঁসোয়াসহ সবার ছিল প্রায় অভিন্ন কন্ঠ। দলগুলোর অভিযোগ, করোনার এই সময়ে  নির্বাচন দিয়ে জনগণকে বিপদের মধ্যে ফেলে দিলেন। ৬১০ মিলিয়ন ডলারের এই ভোট, অপচয় ছাড়া কিছুই না। জনমত জরিপও বিরোধীদের মতের প্রতিফলনই ঘটেছে,নির্বাচনের আগে ও পরে। কনজার্ভেটিভ ১১৯(-২), ব্লক ৩৪(+২), এনডিপি ২৫(+১) আর গ্রিন পার্টি ২(-১)টি আসন নিয়ে বসবে হাউস অব কমন্সে। আর আগের বারের সঙ্গে মাত্র ১টি আসন বেশি নিয়ে (১৫৮) ফের মাইনরটি সরকার গঠন করছে জাস্টিনের লিবারেল। 

করোনাকালে পুরো কানাডাকে অতিথিশালা বানিয়ে ফেলা ট্রুডোর জন্য এটাতো হারই!

লেখক: কানাডা প্রবাসী

/এমএম/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়