ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৪ জুন ২০২৫ ||  আষাঢ় ১০ ১৪৩২

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের সমাধান করবে: আমীর খসরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১০, ১৩ মে ২০২৫   আপডেট: ২০:১৯, ১৩ মে ২০২৫
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের সমাধান করবে: আমীর খসরু

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তারা ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের সমাধান করবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন। সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে এএনআই।

সাক্ষাৎকারে আমীর খসরু জানিয়েছেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, কল্যাণ এবং একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত।

তিনি বলেছেন, “ভারত আমাদের প্রতিবেশী। স্পষ্টতই, আমরা সবাই আশা করি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিবেশীসুলভ হওয়া উচিত। পারস্পরিক শ্রদ্ধাশীল, পারস্পরিক কল্যাণকর, হস্তক্ষেপ না করা - এগুলো যেকোনো সম্পর্কের ভিত্তি। আমরা চাই সম্পর্কটি স্থায়ী হোক ও সমৃদ্ধ হোক। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আমরা এভাবেই দেখি। উভয়পক্ষেরই সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া, চেষ্টা করা এবং কাজ করা উচিত, যাতে এই সম্পর্কটি আমি যে ভিত্তির কথা বলেছি তার মাধ্যমে টিকে থাকে।”

আরো পড়ুন:

ভারত ও বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়গুলো আলোচনার টেবিলে আনা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন. “উভয়পক্ষ থেকেই উদ্বেগ রয়েছে। আমাদের এটি আলোচনার টেবিলে আনতে হবে - কিছু স্বল্পমেয়াদী হবে, কিছু মধ্যমেয়াদী হবে এবং কিছু দীর্ঘমেয়াদী হবে। তবে যেকোনো সম্পর্কের ভিত্তি আমি যা উল্লেখ করেছি তার উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের সমাধান করবে বলেও জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

তিনি বলেন, “আমি মনে করি না উদ্বেগের কোনো কারণ আছে। বাংলাদেশের অগ্রাধিকার হল সমৃদ্ধ, উন্নত দেশ। বিএনপি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এই ভূমি কখনোই কোনো বিদ্রোহী বা সন্ত্রাসীদের জন্য ব্যবহার করা হবে না। অবশ্যই, উভয়পক্ষ পারস্পরিকভাবে এই ধরনের পরিস্থিতিকে সম্মান করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সবকিছুই পারস্পরিক। প্রতিবেশী সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন সন্ত্রাসী ও কর্মীদের জন্য কোনো পক্ষেরই ব্যবহৃত হওয়া উচিত নয়।”

বিএনপি নেতা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়েও কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, “কেন এটা ভারতের উদ্বেগের বিষয় হবে, আমি বুঝতে পারছি না। এটা বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণের উদ্বেগের বিষয়। আমার মনে হয় বাংলাদেশিরা এই বিষয়ে অনেক সচেতন। বাংলাদেশ সম্প্রীতির সেরা দেশগুলোর মধ্যে একটি। সংখ্যালঘু, ভাষাগত পার্থক্য এবং সাংস্কৃতিক পার্থক্যের মধ্যে আমাদের চমৎকার সহাবস্থান রয়েছে এবং এটি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ছত্রছায়ায় হয়। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে যারাই বাস করে তারা সমান নাগরিক। আমরা কখনোই ধর্ম, সংস্কৃতি, বা ভাষাগত পার্থক্য নিয়ে বৈষম্য করি না। এটি বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়। ভারত কেন এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হবে? ভারতীয় সংখ্যালঘুদের সাথে কী ঘটবে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই। কারণ সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা ভারত সরকার এবং ভারতীয় রাজনীতিবিদদের কাজ।”

বাংলাদেশে ভারতবিরোধী বক্তব্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “রাজনীতিতে প্রভাবমূলক বক্তব্য অস্বাভাবিক নয়। প্রভাবমূলক বক্তব্য উভয় পক্ষেই থাকে। রাজনীতিবিদরা তাদের নিজস্ব নির্বাচনী এলাকার জন্য প্রভাবমূলক বক্তব্য রাখেন। এটি উভয়পক্ষেই ঘটে। প্রভাবমূলক বক্তব্য তো বক্তব্যই। নীতি আরো গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রভাবমূলক বক্তব্য উভয়পক্ষের জন্যই ভালো নয়। আমাদের একে অপরের সম্পর্ককে সম্মান করা উচিত। হস্তক্ষেপ না করাই মূল বিষয়।”

বিএনপির এই নেতা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ভালো বাণিজ্য সম্পর্কের জন্য সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করার উপর জোর দিয়ে বলেন,“যদি আপনার সত্যিই ভালো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক থাকে, তাহলে তা সব ধরণের সম্পর্ক উন্নত করতে এবং এগিয়ে নিতে উৎসাহিত করবে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও উন্নত করা উচিত।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়