ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

হাসিতে মিলিয়ে গেল বাঘের আতঙ্ক

কলকাতা ব্যুরো || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ২ জুলাই ২০২৫   আপডেট: ১০:২৪, ২ জুলাই ২০২৫
হাসিতে মিলিয়ে গেল বাঘের আতঙ্ক

সুন্দরবনের ভারতীয় অংশ, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পাথরপ্রতিমা ব্লকের গোপালনগর গ্রাম। গ্রাম জুড়ে বাঘের আতঙ্ক। একজন নয়, একাধিক গ্রামবাসীর দাবি গ্রামে বাঘ দেখেছেন তারা। লোকমুখে বাঘ নিয়ে নানা কথায় আতঙ্ক ছড়ায় বহুগুণ।

অঘটন কিছু ঘটার আগেই বাঘ ধরতে গ্রামে ছুটে আসে বনদপ্তর। গ্রামের বিভিন্ন অংশে পাতা হয় ফাঁদ। নিরাপত্তার খাতিরে ছুটে আসে পুলিশ। একসময় বনকর্মী ও গ্রামবাসীদের যৌথ সমন্বয়ে ধরা পড়ে আতঙ্কের বাঘ! বাঘ দেখতে উপচে পড়ে গ্রামবাসীদের ভিড়। কিন্তু একি! এতো বাঘ নয়, বাঘরোল! ইংরেজি নাম ফিশিং ক্যাট।

আরো পড়ুন:

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তর গোপালনগর এলাকার রাস্তায় মঙ্গলবার রাতে বাঘ ভেবে আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকে পথচারীরা। খবর জানাজানি হতে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর দেয়া হয় রামগঙ্গা বনদপ্তরকে, রেঞ্জার সাহেবের নেতৃত্বে বনদপ্তরে কর্মীরা ছুটে আসেন। এদিকে মানুষের ভয়ে আতঙ্কের বাঘ নিজেই আশ্রয় নিয়েছে রাস্তার পাশের ধানক্ষেতে। ফলে আতঙ্ক ছড়ায় গ্রামজুড়ে।

এদিকে বাঘ ধরতে খাঁচা পাতে বনদপ্তর, নেট দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় ধানক্ষেত। একসময় ধরা দেয় বাঘ। বাঘের চেহারা দেখেই বনকর্মীরা জানিয়ে দেয় এই বাঘ সেই বাঘ নয়। এই বাঘ বাঘরোল, অনেকে বলেন মেছোবাঘ। বিড়ালগোত্রীয় প্রাণী যার চেহারা ও আকার ও গায়ে ছোপ ছোপ দাগের কারণে অনেকেই চিতা বাঘভেবে ভুল করেন। 

মেছোবাঘ সাধারণত জলাভূমি এবং ম্যানগ্রোফ এলাকায় বাস করে। এদের উপস্থিতি সেখানকার জলাভূমির অবস্থার ভালো-মন্দ নির্ধারণে সাহায্য করে। এরা সাঁতারে পারদর্শী হওয়ায় এধরনের পরিবেশে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে। তবে বেড়ে চলা জনবসতি, কৃষিজমি রূপান্তরসহ নানা কারণে বাঘরোলের আবাসস্থল জলাভূমিগুলো দিন দিন সংকুচিত ও হ্রাস পাচ্ছে। ফলে অনেক সময় জঙ্গল ছেড়ে খাবারের সন্ধানে গ্রামের দিকে পা বাড়াচ্ছে এই বনবিড়াল জাতীয় বিরাট আকারের প্রাণীটি। 

মঙ্গলবার প্রাণীটিকে উদ্ধারের পর বন দপ্তর জানায়, প্রাণীটি সম্ভবত জঙ্গলের ধারে সড়কে কোনো যানবাহনের দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। ফলে প্রাণীটিকে পাকড়াও করার পর তড়িঘড়ি তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। গ্রামবাসীদের জন্য আতঙ্কের কোনো কারণ নেই । প্রাণীটি সুস্থ হলেই তাকে ফের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। এদিকে বাঘরোল ধরা পড়ার এমন খবর চাউর হতেই বাঘের আতঙ্ক মিলিয়ে যায় হাসিতে।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়