‘আমার সন্তান ফলের স্বাদ জানে না’
জাতিসংঘ সমর্থিত এক প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো গাজায় দুর্ভিক্ষের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর উপত্যকার বাসিন্দারা বিবিসিকে তীব্র ক্ষুধার প্রভাব সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন।
গাজা শহরের পাঁচ সন্তানের মা ৪১ বছর বয়সী রিম তৌফিক খাদের বলেন, “দুর্ভিক্ষ ঘোষণা অনেক দেরিতে হয়েছে, কিন্তু এটি এখননো গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পাঁচ মাস ধরে কোনো প্রোটিন খাইনি। আমার ছোট বাচ্চার বয়স চার বছর - সে জানে না ফল এবং শাকসবজি দেখতে কেমন বা স্বাদ কেমন।”
ছয় সন্তানের মা ৪৭ বছর বয়সী রাজা তালবেহ জানান, তার ওজন ২৫ কেজি (৫৫ পাউন্ড) কমেছে। তিনি এক মাস আগে গাজা শহরের জেইতুন জেলায় তার বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছিলেন এবং এখন সমুদ্র সৈকতের কাছে একটি অস্থায়ী তাঁবুতে থাকেন। এখন তিনি আর খাওয়ার জন্য খাবার খুঁজে পাচ্ছেন না।
তালবেহ বলেন, “যুদ্ধের আগে, একটি দাতব্য সংস্থা আমাকে গ্লুটেন মুক্ত পণ্য পেতে সাহায্য করত, যা আমি কখনই নিজের জন্য কিনতে পারতাম না। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, আমি বাজারে আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাচ্ছি না, এমনকি যখন পাই, তখনো আমি তা কিনতে পারি না। প্রতিদিনের বোমাবর্ষণ, বাস্তুচ্যুতি এবং গ্রীষ্মের তাপ বা শীতের ঠান্ডা থেকে আমাদের রক্ষা করে এমন একটি তাঁবুতে বসবাসের জন্য কি যথেষ্ট ছিল না? এখন এর উপরে যুক্ত হয়েছে দুর্ভিক্ষ।”
২৯ বছর বয়সী রিদা হিজেহ জানান, তার পাঁচ বছরের মেয়ে লামিয়ার ওজন ১৯ কেজি (৪২ পাউন্ড) থেকে কমে ১০ দশমিক ৫ কেজি (২৩ পাউন্ড) হয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে লামিয়া সুস্থ ছিল।
তিনি বলেন, “এ সবই ঘটেছে কেবল দুর্ভিক্ষের কারণে। শিশুটির খাওয়ার জন্য কিছুই নেই। কোনো শাকসবজি নেই, কোনো ফল নেই।”
গাজা শহরে প্রথমবারের মতো দুর্ভিক্ষ থাকার বিষয়টি শুক্রবার নিশ্চিত করেছে খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতিসংঘ সমর্থিত সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)। সংস্থাটি বলেছে, গাজা উপত্যকার পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ ‘ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং মৃত্যুর’ মুখোমুখি হচ্ছে।
ঢাকা/শাহেদ