ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

দনিপ্রোপেত্রভস্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে রুশ বাহিনী, স্বীকার ইউক্রেনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৮, ২৭ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১০:৩৬, ২৭ আগস্ট ২০২৫
দনিপ্রোপেত্রভস্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে রুশ বাহিনী, স্বীকার ইউক্রেনের

ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ দনিপ্রোপেত্রভস্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। প্রথমবারের মতো এ তথ্য স্বীকার করেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। রুশ সেনারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের এই শিল্প এলাকায় নিজেদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে তারা।

বুধবার (২৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

প্রতিবেদনে বলা হয়, খনি ও শিল্পের জন্য দনিপ্রোপেত্রভস্ক অঞ্চল ইউক্রেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে তার ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে যে পাঁচটি ইউক্রেনীয় অঞ্চল দাবি করে, তার মধ্যে দনিপ্রোপেত্রভস্ক অন্তর্ভুক্ত নয়।

সামরিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন যে, এই অঞ্চলের গভীরে মস্কোর অগ্রগতি কিয়েভের অর্থনীতি এবং সামরিক বাহিনীর জন্য উল্লেখযোগ্য অসুবিধা তৈরি করতে পারে।

দনিপ্রোর অপারেশনাল-স্ট্র্যাটেজিক গ্রুপ অব ট্রুপসের ভিক্টর ত্রেহুবভ বিবিসিকে বলেন, “দনিপ্রোপেত্রভস্কে এটাই প্রথম এ ধরনের বড় আকারের হামলা।” তবে তিনি স্পষ্ট করে জানান, রুশ অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গত গ্রীষ্ম থেকেই রাশিয়া দাবি করে আসছে যে, তাদের সেনারা ওই এলাকায় প্রবেশ করেছে। তারা দোনেৎস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনের ভেতরে আরো গভীরে ঢোকার চেষ্টা করছে। গত জুনের শুরুর দিকে রুশ কর্মকর্তারা বলেছিলেন, দনিপ্রোপেত্রভস্কে তাদের অভিযান শুরু হয়েছে। যদিও ইউক্রেনীয় সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, তারা কেবল সীমান্ত অতিক্রম করতে পেরেছে।

দনিপ্রোপেত্রভস্কে রুশ অগ্রযাত্রা ইউক্রেনের মনোবলের জন্য বড় আঘাত হবে, বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন কূটনৈতিক প্রচেষ্টা যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে ভাটা পড়ছে- যদিও আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক হয়েছে।

ইউক্রেনীয় ডিপস্টেট ম্যাপিং প্রজেক্ট মঙ্গলবার জানায়, রুশ বাহিনী দনিপ্রোপেত্রভস্ক সীমান্ত ঘেঁষে দুইটি গ্রাম-জাপোরিজকে এবং নভোহ্রিহোরিভকা দখল করেছে। তবে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ এ দাবি নাকচ করেছেন। তার ভাষায়, জাপোরিজকে এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে আছে এবং নভোহ্রিহোরিভকার আশপাশে লড়াই চলছে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, পুতিন ট্রাম্পকে জানিয়েছেন, ইউক্রেন যদি দোনেৎস্কের অবশিষ্ট অঞ্চল রাশিয়ার হাতে তুলে দেয়, তাহলে তিনি যুদ্ধ শেষ করতে রাজি। তবে অনেক ইউক্রেনীয় মনে করেন, রুশ প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য এর চেয়েও বড়।

কিয়েভের প্রেসিডেন্ট অফিসের উপপ্রধান কর্নেল পাভলো পালিসা গত জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকদের বলেন, ক্রেমলিন দনিপ্রো নদীর পূর্বের পুরো ইউক্রেন দখল করতে চায়। এই নদী ইউক্রেনকে দুইভাগে ভাগ করেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কালাসও সতর্ক করে বলেন, শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনের ভূমি রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হবে ‘একটি ফাঁদ’। তিনি বলেন, “আমরা ভুলে যাচ্ছি, রাশিয়া কোনও ছাড় দেয়নি, বরং তারাই এখানে আগ্রাসন চালাচ্ছে।”

আলাস্কায় পুতিন এবং ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর, ট্রাম্প গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তিনি পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

কিন্তু পরবর্তীতে এ বিষয়ে অগ্রগতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানিয়েছিলেন যে, বৈঠকের এজেন্ডা মোটেও প্রস্তুত নয় এবং কোনো বৈঠকের পরিকল্পনাও করা হয়নি।

মঙ্গলবার গভীর রাতে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ ফক্স নিউজকে বলেন, তিনি এই সপ্তাহের শেষের দিকে নিউ ইয়র্কে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিনই রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইতিমধ্যে তার পশ্চিমা মিত্রদের একটি চুক্তির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা গ্যারান্টিতে একমত হওয়ার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়