আদালতে বিচারককে গুলি করে হত্যা
আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানার আপিল আদালতে বিচার চলাকালীন এক ব্যক্তির গুলিতে এক বিচারক নিহত হয়েছেন। গুলিতে আরো দুজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দেশটিতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
পুলিশ জানিয়েছে, আপিল আদালতের বিচারক অ্যাস্ট্রিট কালাজা একজন অভিযুক্তের মামলার শুনানি করছিলেন, তখন অভিযুক্ত হঠাৎ গুলি চালায়। পুলিশের এক বিবৃতি অনুসারে, ‘বিচারককে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু পথেই তিনি মারা যান।’
মামলার বাদী এবং তার ছেলেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।
পুলিশের মতে, ৩০ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ব্যক্তি যিনি গুলি চালিয়েছিলেন, তাকে পালানোর চেষ্টা করার সময় গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার কাছ থেকে একটি রিভলবার উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম এলভিস শকাম্বি বলে জানিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, মামলাটি সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের সাথে জড়িত। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি আশঙ্কা করেছিলেন তিনি মামলাটি হেরে যাবেন, তাই তিনি বিচারকের উপর গুলি চালিয়েছিলেন। তবে, কর্তৃপক্ষ এখনো সন্দেহভাজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি।
আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা বিচারক কালাজার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বলেছেন, “বিচারকের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক আগ্রাসনের জন্য নিঃসন্দেহে আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তিনি দেশের আদালতের ভেতরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করার পাশাপাশি এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার জন্য কঠোর শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা সালি বেরিশা বলেছেন, বিচারক কালাজার হত্যাকাণ্ডটি ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো একজন বিচারককে ‘তার কর্তব্য পালনের সময়’ হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, “আজ পুরো আলবেনীয় সমাজের জন্য একটি গভীর শোকের দিন।”
আদালত কক্ষে বিচারকদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র হামলার ঘটনা বিরল। এক দশক আগে, ইতালির মিলানের প্যালেস অব জাস্টিসের একজন বিচারককে দেউলিয়া মামলায় বিচারাধীন এক ব্যক্তি গুলি করে হত্যা করেছিল।
বন্দুকধারী পালিয়ে যাওয়ার আগে একজন আইনজীবী এবং তার সহ-আসামিকেও হত্যা করেছিল, কিন্তু পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
বিচারক কালাজা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আইনজীবী ছিলেন। ২০১৯ সালে তিরানার আপিল আদালতে নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি প্রথমে একটি জেলা আদালতের বিচারক ছিলেন।
ঢাকা/ফিরোজ