টিকটক করায় শিক্ষকের মারধরে ছাত্রের মৃত্যু, স্কুল ভাঙচুর
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে টিফিন পিরিয়ডে বন্ধুর জন্মদিনের কেক কেটে টিকটক করার অপরাধে শিক্ষকের মারধরে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা ও মারা যাওয়া শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। এসময় তারা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।
এদিকে, শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ দুইজনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
রোববার (১৬ জুলাই)দুপুরের দিকে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে।
মারা যাওয়া শিক্ষার্থীর নাম প্রতাপ চন্দ্র দাস। সে চন্ডীপুর গ্রামের মনোরঞ্জন দাসের ছেলে ও নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
মারধর করা অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম অবকাশ খাঁ। তিনি উপজেলার কাজলা গ্রামের বাসিন্দা ও নলতা স্কুলের সহকারী শিক্ষক।
স্কুলের শিক্ষক অবকাশ খাঁ বলেন, ‘টিফিন পিরিয়ডে স্কুলের ছাদে কেক কেটে টিকটক ভিডিও করছিল প্রতাপ। আমি বকাবকি করলে সে পাল্টা আমার সঙ্গে দুর্ব্যাবহার করে। এতে আমি রাগান্বিত হয়ে তাকে কয়েকটা চড়-থাপ্পড় মেরেছি। পরে প্রতাপ তার বন্ধুদের নিয়ে বাড়ি চলে যায়।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোনায়েম হোসেন বলেন, ‘বেয়াদবি করার কারণে কয়েকটা চড় মারা হয়েছিল ওই শিক্ষার্থীকে।এতেই দুর্ঘটনা ঘটে গেছে।’
প্রতাপের চাচি তাপসী দাস বলেন, ‘বাড়িতে এসে টয়লটে যায় প্রতাপ। সেখান থেকে বের হয়ে সে বমি করতে শুরু করে। পরে সে অসুস্থ্য বোধ করছে বলে জানায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়।’ প্রতাপ কোনো কীটনাশক পান করেছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তাপসী।
এদিকে, মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সহপাঠীসহ এলাকাবাসী বাড়ি থেকে প্রতাপের মরদেহ নিয়ে স্কুল চত্বরে যান।তারা সেখানে বিক্ষোভ করেন। এসময় তারা প্রধান শিক্ষকের কক্ষসহ স্কুলের বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করেন। একই সঙ্গে সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের পাশাপাশি পুড়িয়ে দেওয়া দেন একটি মোটরসাইকেল। খবর পেয়ে কালিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের বেগ পেতে হয়। ৫ ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুর রহমান জানান, ‘প্রতাপের কানে এমনভাবে চড়- কিল ঘুষি মারা হয়েছে যে, সে বাড়ি ফিরেই মারা গেছে।’
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে দুইজন শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
শাহীন/ মাসুদ