ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বিচারের আশায় মান্নার স্ত্রীর একযুগ পার

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫২, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৭:৫৫, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১
বিচারের আশায় মান্নার স্ত্রীর একযুগ পার

নায়ক মান্নার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি)। বাংলা চলচ্চিত্রের এই সুপারস্টারের মৃত্যু চিকিৎসকদের অবহেলায় হয়েছে বলে স্বজনদের অভিযোগ।  বিচার বিভাগীয় তদন্তের পর ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।  পরে তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচারও শুরু হয়। কিন্তু আসামিরা উচ্চ আদালতে গেলে মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এ কারণে বিচার প্রক্রিয়া আর এগোতে পারেনি।

মামলা ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বিচারাধীন ছিল।  সম্প্রতি মান্নার পরিবার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেছে। মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না বলছেন, এক যুগ তো পার হয়ে গেলো। আশা করছি, এ বছর মামলার কিছু একটা হবে।

শেলী মান্না বলেন, ফেব্রুয়ারি মানেই আমাদের কাছে শোকের মাস। এ মাসেই মান্নাকে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয়। যাদের কারণে তাকে চলে যেতে হলো তাদের বিচার হলো না। আশা করছি, এ বছর মামলার কিছু একটা হবে।

তিনি বলেন, প্রথমদিকে সবাই বিচারের জন্য সোচ্চার ছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে অদৃশ্য কোনো কারণে কেউ আর খোঁজ নেয় না। চাষী নজরুল ইসলাম যখন ছিলেন, তখন তিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পর আর তেমন কাউকে পাশে পায়নি। তবে এখন মিডিয়া, মান্নার ভক্তরা তার মৃত্যুর বিচার দাবি করছে। আমরা সেভাবে আগাচ্ছি। 

সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর হোসেন (দুলাল) বলেন, মামলার কার্যক্রম হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন। এজন্য বিচার হচ্ছে না।  স্ট্রে অর্ডার বাতিলের জন্য আবেদন করা হয়েছে।  ভার্চুয়াল কোর্ট চলায় এখন শুনানি হচ্ছে না।  রেগুলার কোর্ট চালু হলে মামলার শুনানি হবে।

তিনি বলেন, মান্না মানে একটা ইন্ডাস্ট্রি।  অথচ তার মামলা এতদিন স্থগিত রয়েছে। উচ্চ আদালত স্ট্রে অর্ডার তুলে নিলে মামলার বিচার আমাদের কোর্টে শুরু হবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব মামলার বিচার শেষ করবো।

২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বুকে ব্যথা অনুভব করায় ভোরে মান্না ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা হাসপাতালে আসেন সকাল ৯টায়। চিকিৎসা দেরিতে শুরু হওয়ায় ‘অ্যাকিউট মায়োকারডিয়াল ইনফ্রাকশনে’ আক্রান্ত হন। চিকিৎসা শাস্ত্র অনুয়ায়ী আক্রান্ত হওয়ার ৯০ মিনিটের মধ্যে রোগীকে নির্দিষ্ট ইনজেকশন দিতে হয়। কিন্তু মান্নাকে এই ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে আক্রান্ত হওয়ার ৫ ঘণ্টা পর। হৃদরোগ বিভাগের ওই ৬ চিকিৎসকদের অবহেলার জন্য মান্নার মৃত্যু হয় বলে স্বজনদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।

১৭ সেপ্টেম্বর মান্নার স্ত্রী শেলী কাদেরের ভাই রেজা কাদের ঢাকা সিএমএম আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলা বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। ১৩ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান সিদ্দিক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন তৎকালীন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক ফিরোজ আলম। এরপর ১, ২ ও ৩ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত।  সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য থাকা দিনেই সংশ্লিষ্ট বিচারক বদলি হয়ে যান।  থেমে যায় সাক্ষ্যগ্রহণ। এরপর আসামিরা মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

আসামিরা হলেন-ডা. মো. এনায়েত হোসেন শেখ, ডা. জহির উদ্দিন মাহমুদ ইলিয়াস, ডা. মোমেনুজ্জামান, ডা. ফাতেমা, ডা. মাইনুল ইসলাম মজুমদার ও ডা. খন্দকার মাহবুব হোসাইন।

মামুন/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়