ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চাঞ্চল্যকর মাসুদ হত্যার রহস্য উদঘাটন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২০, ৮ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ১৬:১৬, ৮ অক্টোবর ২০২১
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চাঞ্চল্যকর মাসুদ হত্যার রহস্য উদঘাটন

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ফরিদ। সংগৃহীত ছবি

ঢাকার সাভার থেকে নিখোঁজ হওয়া অটোরিকশা চালক মাসুদ শেখের (২৭) হত্যা রহস্য উদঘাটন ও ঘাতক মো: ফরিদকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও গামছাও উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ফরিদের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানা এলাকায়। তার নিজের কোনও অটোরিকশা না থাকায় অন্যের অটোরিকশা ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। তবে নিজের একটি অটোরিকশার মালিক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। এক সময় খুনের শিকার মাসুদের অটোরিকশাটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। এ উদ্দেশ্যে মাসুদের সাথে প্রথমে বন্ধুত্ব স্থাপন করে, পরবর্তীতে ঘটনার দিন মাসুদের অটোরিকশা ভাড়া করে।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মাসুদকে কৌশলে মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার দাশেরহাটি আলমমারা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সুযোগ বুঝে গলায় গামছা পেঁচিয়ে, ছুরি দিয়ে গলায় উপুর্যপুরি আঘাত করে খুন করে ফরিদ। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর দু’হাতের আঙ্গুল কেটে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে খরার চর বাজারের আলমাস হোসেনের গ্যারেজে নিয়ে ১৫ হাজার টাকায় অটোরিকশার রং, বডি ও মডেল পরিবর্তন করার জন্য রেখে যায় এবং ঘটনাস্থল থেকে ২ কি.মি. দূরে গোবিন্দল গ্রামের তালপট্টি ব্রিজের নিচে খুনে ব্যবহৃত ছুরি ও গামছা ফেলে আত্মগোপনে চলে যায়।

র‌্যাব আরও জানায়, নিহত মাসুদ শেখের বাড়ি রাজবাড়ি জেলায়। তার বাবা জীবিকার প্রয়োজনে প্রায় ২৬ বছর আগে ঢাকা জেলার সাভারের সবুজবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। মাসুদ পেশায় অটোরিকশা চালক। তিনি সাভারসহ সিংগাইর ও ধামরাই এলাকায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

গত শনিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে মাসুদ অটোরিকশা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। পরে রাত ১১টা পর্যন্ত বাসায় না ফিরলে পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। এ সময় তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে মাসুদের ভাই মো: মজনু মিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিখোঁজের খবর প্রচার করেন এবং রোববার (৩ অক্টোবর) সাভার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে এক সাংবাদিক জানান, একটি অজ্ঞাত লাশ মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানার দাশেরহাটি গ্রামে পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিক তার ভাই ও তার পরিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি শনাক্ত করেন।

পরে মজনু মিয়া বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করার পর র‌্যাব-৪ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান, মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) একটি অজ্ঞাত লাশ মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানার দাশেরহাটি গ্রামে পাওয়া যায়। ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করলে তারই অংশ হিসেবে বুধবার (৬ অক্টোবর) রাতে সাভার মডেল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও মূল হত্যাকারী ফরিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফরিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আলমাস হোসেনের অটোপার্সের দোকান থেকে নিহতের ছিনতাইকৃত অটোরিকশা, মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও গামছা উদ্ধার করা হয়।

মাকসুদ/কেআই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়