যুদ্ধকালীন ৬ জনকে হত্যা করে রোকনুজ্জামান: র্যাব
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী খান রোকনুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সাভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রোববরা (১ অক্টোবর) দুপুরে র্যাব-২ এর সিনিয়ির সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শিহাব করিম জানান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যুদ্ধাপরাধী খান রোকনুজ্জামানসহ রাজাকার বাহিনীর অন্যান্য দোসররা সাতক্ষীরা এলাকায় মুক্তিকামী মানুষের ওপর নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজ করে। রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে রোকনুজ্জামান উল্লিখিত মানবতাবিরোধী কাজে সরাসরি অভিযুক্ত। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি সাতক্ষীরা জেলায় ৫ ব্যক্তিকে গলা কেটে ও ১ জনকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা, ২ জনকে ধর্ষণ ও ১৪ জনকে আটক করে নির্যাতনের মতো অপরাধে জড়িত ছিল। এ ঘটনায় ২০১৫ সালে সাতক্ষীরায় রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে অবৈধ আটক, নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে একটি মামলা হয়। পরবর্তীতে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে। ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত শেষে ১৭ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৬ জনকে হত্যা, ২ জনকে ধর্ষণ, ১৪ জনকে আটক ও নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ৬টি অভিযোগ আনা হয়।
র্যাব জানায়, ট্রাইব্যুনাল দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের মাচ মাসে রোকনুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এর প্রেক্ষিতে র্যাব-২ মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত পলাতক যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব আভিযান পরিচালনা করে রোকনুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
/মাকসুদ/এসবি/