ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের সাড়ে ৪ বছর কারাদণ্ড 

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৪, ২৭ মে ২০২৪  
দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের সাড়ে ৪ বছর কারাদণ্ড 

অন্যায়ভাবে আটক করে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার মামলায় রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার সাবেক এএসআই মো. মনিরুল ইসলাম ও কনস্টেবল এস এম জুলফিকার আলীসহ তিনজনকে পৃথক দুই ধারায় সাড়ে ৪ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামির নাম মো. নূর উদ্দীন আহমেদ। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মো. নিরব হাসান সজিব নামের এক আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২৭ মে) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। 

ওই তিনজনকে দণ্ডবিধির ৩৪২ ধারায় ৬ মাস কারাদণ্ড ও ৩৮৮ ধারায় ৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৪ মাস কারাভোগ করতে হবে। আসামিদের সবগুলো সাজা একত্রে ভোগ করতে হবে। অর্থাৎ প্রত্যেক আসামিকে ৪ বছর করে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বাদী খন্দকার নুরুজ্জামান রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবারের সঙ্গে কাজ করেন। ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি মোবাইল ফোনে উবারের মাধ্যমে মালিবাগের গুলবাগ রোড থেকে একটি কল রিকুয়েস্ট গ্রহণ করেন। রাস্তা কাটা থাকায় কল দেওয়া ব্যক্তি জানান যে, তার ছোট ভাই নুরুজ্জামানকে মালিবাগ মোড়ের কাছে স্বপ্ন নামের এক দোকানের সামনে থেকে পথ দেখিয়ে পিকআপ পয়েন্টে নিয়ে আসবেন। সে মোতাবেক নুরুজ্জামান দোকানের সামনে গেলে নিরব হাসান সজিব পথ দেখানোর কথা বলে মালিবাগ কালসির গলির শেষ প্রান্তে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে পুলিশের পোশাকে আসামি মনিরুল ও জুলফিকারকে দেখতে পান নুরুজ্জামান। আসামিরা নুরুজ্জামানের পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন ও তার গাড়ি তল্লাশি করে ড্রাইভার সিটের পিছনে হাত বুলিয়ে একটি লম্বা ট্যাপে মোড়ানো ৪-৫টি ট্যাবলেট সাদৃশ্য কিছু দেখান। নুরুজ্জামানকে ওই পণ্যের ব্যবসায়ী বলে অভিযুক্ত করা হয়। ওই সময় আরেক আসামি সাংবাদিক পরিচয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ও এসএম জুলফিকার নুরুজ্জামানকে ‘ট্যাবলেট’ ব্যবসায়ী বলে জানান এবং হাতকড়া পরিয়ে আটকে ফেলেন।

অভিযোগ থেকে আরও বলা হয়, এক আসামি নুরুজ্জামানের গাড়িতে ওঠেন এবং গাড়ি চালিয়ে বড় ফটক লাগানো খালি এক জায়গায় নিয়ে যেতে বলেন। বাদী ওখানে যাওয়ার পর এক আসামি গেট বন্ধ করে দেন। পরে একটি একচালা টিনের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় নুরুজ্জামানকে। এরপর বাদীকে বসতে বলে আসামিরা সমঝোতা করতে চাপ প্রয়োগ করেন। বাবু নামের আরেক আসামির সঙ্গে কথা বলে ৬০ হাজার টাকা চান আসামিরা। বাদী টাকা দিতে না চাইলে ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। বাদী অসুস্থ বলে শেষমেশ ২৫ হাজার টাকায় রফাদফা হয়। 

আসামিদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে শাহজাহানপুর থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন খন্দকার নুরুজ্জামান। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার এসআই আবু সিদ্দিক ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরের বছর ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১২ সাক্ষীর মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

মামুন/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়