এমপি আনার খুন
ভিডিওকলে কথোপকথন, এখনও মেলেনি মরদেহের খণ্ডিত অংশ
ঢাকা থেকে ভিডিওকলে যুক্ত করা হয় আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুলসহ গ্রেপ্তার ৩ জনকে
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যাকাণ্ডের স্থান দেখালেন দুই দেশে গ্রেপ্তার ৪ আসামি। সঞ্জিব গার্ডেনের ওই ফ্ল্যাটে এ সময় ডিএমপি ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ প্রতিনিধিদলের সামনে ঢাকা থেকে ভিডিওকলে যুক্ত করা হয় আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুলসহ গ্রেপ্তার ৩ জনকে। ফ্ল্যাটের কোথায়, কীভাবে হত্যা করা হয়, মরদেহ কীভাবে খণ্ড খণ্ড করা হয়, কীভাবে বাইরে নেওয়া হয়, তারা সবই বর্ণনা করেন। তবে, এখনও মরদেহের খণ্ডিত অংশের তথ্য বিস্তারিত পাওয়া যায়নি। সোমবার (২৭ মে) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল কলকাতায় অবস্থান করছে। তারা সেখানে নিহতের মরদেহের খণ্ডিত অংশ খুঁজতে ইতোমধ্যে কসাই জিহাদকে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হওয়া ৩ আসামিকে ভিডিওতে দেখিয়ে কথা বলে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছেন। সেক্ষেত্রে নিহতের মরদেহের খণ্ডিত অংশ দ্রুতই খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলে তদন্তসংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
ঢাকার একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কলকাতার সঞ্জিব গার্ডেনের ওই ফ্ল্যাটের কোথায়, কীভাবে হত্যা করা হয়, মরদেহ কীভাবে খণ্ডিত করা হয়েছে, কীভাবে মরদেহের খণ্ডিত অংশ বের করা হয়— এ নিয়ে ওই ৪ জনের মধ্যে ভিডিওকলে কথোপকথন হয়েছে। ঢাকায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো— আমানউল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তানভির ও শিলিস্তা রহমান। তারা কলকাতায় কসাই জিহাদের সঙ্গে কথা বলেন। মূলত, শিমুল ভূঁইয়া যেসব তথ্য দিয়েছে, সেগুলো নিশ্চিত হতে জিহাদের সঙ্গে কথা বলানো হয়। খণ্ডিত মরদেহ যেখানে ফেলানো হয়েছে, সে বিষয়েও কসাই জিহাদ ঠিক বলেছে কি না, তাও যাচাই-বাছাই করা হয়। এ সময় বাংলাদেশের ডিএমপি ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদসহ তদন্তসংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
গোয়েন্দারা সন্দেহ করছেন, কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া জিহাদ হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকে দেহাংশ ফেলা পর্যন্ত সবকিছু জানেন। এজন্য তার সঙ্গে কথোপকথনের ব্যবস্থা করেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। এ সময় তারা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো নিয়ে চলছে যাচাই-বাছাই।
সোমবার (২৭ মে) কলকাতা থেকে ঢাকার ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ এদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, কলকাতা পুলিশ তথা তদন্তসংশ্লিষ্টরা যেভাবে সহযোগিতা করছেন, তাতে করে যে কোনও সময় মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার হতে পারে। তবে, এখনো বলার মতো কিছু পাওয়া যায়নি। শিমুল যে তথ্য দিয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে কিছুই বলছে না। শুধু এদিক-ওদিকের কথা বলছেন। তারপরও আমরা আশা ছাড়িনি। মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধারে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাব।
এদিকে, ঢাকায় পুলিশ রিমান্ডে থাকা ৩ আসামি খুনের সঙ্গে আরও কয়েকজনের কথা বলেছেন। তারা দেশে-বিদেশে অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যে তাদের রিমান্ডে দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে কীভাবে আইনের আওতায় আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, মরদেহ উদ্ধারে ২৬ মে হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে একটি দল কলকাতা যায়। তবে, সোমবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মরদেহের কোনও অংশ উদ্ধার হয়নি। পাশাপাশি খুনে ব্যবহার করা চাপাতিসহ অন্য অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারে কলকাতা পুলিশ ময়লার ভাগাড়, খাল-বিলে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে।
এর আগে, গত ১২ মে ভারতের কলকাতায় চিকিৎসা করাতে যান এমপি আনার। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
মাকসুদ/এনএইচ