ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নবজাতকের জন্ডিস হলে

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৯, ২৫ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নবজাতকের জন্ডিস হলে

প্রতীকী ছবি

আহমেদ শরীফ : নবজাতকের জন্ডিস হওয়ার খবর হরহামেশাই পাওয়া যায় এখন। শিশু জন্মের পর তার শরীর ও চোখ হলুদ দেখা গেলে সে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছে বলে ধরে নেন চিকিৎসকরা।

জন্মের পর অনেক শিশুর শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়। বড়দের ক্ষেত্রে বিলিরুবিনকে নিয়ন্ত্রণ করে লিভার। নবজাতকের ক্ষেত্রে যেহেতু তার লিভার পুরোপুরি তৈরি হয় না, তাই বিলিরুবিন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তার শরীর। তবে সুখবর হলো বেশিরভাগ সময়ই নবজাতক যখন ধীরে ধীরে বুকের দুধ খাওয়া শুরু করে, তখন তার শরীরে বিলিরুবিন বন্টন হয়ে যায়। এতে করে জন্ডিসও সেরে যায়। আর এটা হয় শিশু জন্মের দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে।

তবে তিন সপ্তাহের বেশি সময় জন্ডিস থাকলে, তা শিশুর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ নবজাতকের শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি থাকলে তা শিশুর শ্রবণশক্তি সহ মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াস্ট্রিকস বলছে, সব নবজাতকেরই হাসপাতাল ছাড়ার আগে জন্ডিস পরীক্ষা করানো উচিত। আর শিশুর বয়স ৩ থেকে ৫ দিন হলে তার জন্ডিস আছে কি না তা পরীক্ষা করা দরকার। নবজাতকের শরীরে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে সে জায়গা হলুদ হয়ে গেলে বুঝতে হবে তার জন্ডিস আছে। রক্ত পরীক্ষা সহ বেশ কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর জন্ডিস আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়।

নবজাতকের কেন জন্ডিস হয়:
যেসব ক্ষেত্রে নবজাতক জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে বেশি-

* অপরিণত বয়সে (৩৭ সপ্তাহের কম সময় মায়ের গর্ভে থেকে) জন্ম নিলে।
* যেসব নবজাতক জন্মের পর নির্দিষ্ট সময়ে মায়ের বুকের দুধ পায় না।
* মায়ের রক্তের সঙ্গে যেসব নবজাতকের রক্তের ধরন উপযুক্ত না (কারণ এতে নবজাতকের শরীরে এমন এন্টিবডি তৈরি হয়, যা রক্তের লোহিত কণিকা ভেঙ্গে আকস্মিক বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়)।
* মায়ের শরীরে কোনো অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হলে।
* মায়ের লিভারের সমস্যা থাকলে।
* কোনো ইনফেকশন থাকলে।
* কোনো এনজাইমের ঘাটতি থাকলে।
* নবজাতকের লোহিত কণিকায় কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে।

চিকিৎসকের কাছে কখন যেতে হবে:
সাধারণত নবজাতকের শরীরে থাকা জন্ডিস যেহেতু ধীরে ধীরে এমনিতেই সেরে যায়, তাই ভয়ের তেমন কিছু থাকে না। তবে যেসব পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত সেগুলো হলো-

* জন্ডিসের মাত্রা যদি খুব বেশি মনে হয়।
* নবজাতকের শরীরে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি জ্বর থাকলে।
* শিশুর শরীর বেশি হলুদ মনে হলে।
* শিশু মায়ের দুধ পান করতে না পারলে, দুর্বল মনে হলে ও সে যদি খুব বেশি কান্না কাটি করে।

শিশুর জন্ডিসে চিকিৎসা
সাধারণত অল্প জন্ডিস থাকলে তা ধীরে ধীরে সেরে যায়। জন্ডিসের মাত্রা বেশি হলে ফটো থেরাপি দিতে হয়। এটা বেশ কার্যকর থেরাপি। এক্ষেত্রে শিশুকে শুধু ডাইপার পরিয়ে ও চোখে বিশেষ প্রতিরোধক গ্লাস দিয়ে নীল আলোর নিচে বিশেষ বিছানায় রাখা হয়। জন্ডিস বেশি হলে শিশুর শরীরে অল্প পরিমাণে রক্ত দিতে হয় অনেক ক্ষেত্রে। তবে জন্ডিস অল্প মাত্রায় থাকলে প্রতিদিন ৮ থেকে ১২ বার মায়ের দুধ পান করালে জন্ডিস ধীরে ধীরে সেরে যায়। আর বহু আগে থেকে একটা প্রচলিত বিশ্বাস আছে, নবজাতককে প্রতিদিন সকালের রোদে কিছুক্ষণ রাখলে সে জন্ডিস থেকে মুক্ত হয় দ্রুত।

তথ্যসূত্র : হেলথ লাইন



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ নভেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়