ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

এলাকাভিত্তিক তথ্যের অভাবে ‘ঝুলে আছে’ লকডাউন

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১২, ১৬ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
এলাকাভিত্তিক তথ্যের অভাবে ‘ঝুলে আছে’ লকডাউন

করোনার প্রাদুর্ভাব বিবেচনায় রাজধানীর ৪৫টি এলাকাকে রেড জোন করার সুপারিশের পর ওই এলাকাগুলোতে তা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এরইমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য, কাউন্সিলর, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, সেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে যোগাযোগও করা হয়েছে।

তবে সুনির্দিষ্ট এলাকার তথ্য না পাওয়ায় লকডাউন বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, করোনা প্রতিরোধে জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশে যেসব এলাকা লকডাউন করতে হবে সেসব এলাকায় যোগাযোগ করা হয়েছে। ওই এলাকাগুলোতে এরইমধ্যে মাইকিং করা হয়েছে যেন, আপাতত বিকেল ৪টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং প্রয়োজন ছাড়া লোকজন যেন ঘর থেকে বের না হন।  প্রাথমিকভাবে রেড জোন এলাকায় কোথায় কেন্দ্র খোলা হবে তা চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশনের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।  পাশাপাশি কোভিড নমুনা সংগ্রহের বুথ, কেন্দ্রীয় মনিটরিং ওই কেন্দ্র থেকে করতে হবে।

সূত্র আরও জানায়, লকডাউন এলাকায় খাবার সামগ্রী পৌঁছে দিতে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে খাবার পৌঁছে দেবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যারা অনলাইনে খাদ্য সামগ্রী অর্ডার করতে পারবেন না তারা যেন বাসার নিচ থেকে খাবার কিনতে পারেন সে বিষয়ে দৈনিক একটি ভ্যান স্বাস্থ্যবিধি মেনে লকডাউন এলাকায় প্রবেশের চিন্তা করা হচ্ছে। এছাড়া সার্বিক বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনীকে সম্পৃক্ত করা হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, আমরা এরইমধ্যে পূর্ব রাজাবাজারে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করে দেখেছি।  যেভাবে কার্যক্রম নিয়েছি তাতে সফল।  তবে একই স্ট্র্যাটিজি সব জায়গায় কাজে আসবে তা কিন্তু না। এজন্য এলাকা বিবেচনায় পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের ঘরে খাবার থাকা।  পূর্ব রাজাবাজারে অনেককে আগে থেকেই খাবার কিনে রাখতে দেখেছি।  আবার অনেকে দিনের খাবার দিনেই কিনছেন। এটা নিয়মিত সরবরাহ করা বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া প্রতিটি এলাকায় নিম্নআয়ের বা কর্মহীন জনগোষ্ঠী রয়েছে। তাদের নিয়মিত খাবারের বন্দোবস্ত না থাকলে লকডাউন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা কঠিন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মমিনুর রহমান মামুন বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউন বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা দক্ষিণের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফ আহমেদও জোরালো প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেন।

তবে দুই সিটি করপোরেশনের বক্তব্য যে জায়গায় এক তা হলো, এখনো কোন এলাকাকে লকডাউন করতে হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে তারা জানেন না। সুনির্দিষ্ট এলাকা জানতে তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানানো হয়েছে দুই সিটি থেকে।

মঙ্গলবার (১৬ জুন) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, করপোরেশনের ১৭টি এলাকাকে লকডাউন করা হবে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কোন এলাকাকে রেড জোন করে লকডাউন করা হবে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

একই কথা বলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করার পর ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আমরা লকডাউন করতে পারবো।  কিন্তু এর আগে আমাদেরকে সুনির্দিষ্ট ম্যাপিং পেতে হবে।

আক্রান্তের হার বিবেচনায় রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে চিহ্নিত করে করোনা প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি ঢাকার ৪৫টি এলাকাকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বা রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত করে তা লকডাউনের সুপারিশ করেছিল। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৮টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭টি এলাকা রয়েছে।

উত্তর সিটির এলাকাগুলো হলো - গুলশান, বাড্ডা, ক্যান্টনমেন্ট, মহাখালী, তেজগাঁও, রামপুরা, আফতাবনগর, মগবাজার, এয়ারপোর্ট, বনশ্রী, রাজাবাজার, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, গুলশান, উত্তরা, মিরপুর।

দক্ষিণ সিটির এলাকাগুলো হলো - যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মুগদা, গেন্ডারিয়া, ধানমন্ডি, জিগাতলা, লালবাগ, আজিমপুর, বাসাবো, শান্তিনগর, পল্টন, কলাবাগান, রমনা, সূত্রাপুর, মালিবাগ, কোতোয়ালি, টিকাটুলি, মিটফোর্ড, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, ওয়ারী, খিলগাঁও, পরীবাগ, কদমতলী, সিদ্ধেশ্বরী, লক্ষ্মীবাজার, এলিফ্যান্ট রোড ও সেগুনবাগিচা।


ঢাকা/নূর/জেডআর

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়