প্রস্তুত গোলাপ গ্রাম
সাইফ বরকতুল্লাহ, গোলাপ গ্রাম থেকে ফিরে || রাইজিংবিডি.কম
নয়নাভিরাম গোলাপ গ্রাম (ছবি: রাইজিংবিডি)
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। এদিকে এবার একই দিনে শুরু হচ্ছে পয়লা ফাল্গুন। এ উপলক্ষে ফুল চাষিরা বিক্রির জন্য অন্তত আড়াই কোটি টাকার ফুল প্রস্তুত করে রেখেছেন। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সাভারের বিরুলিয়া গোলাপ গ্রাম নামে সুপরিচিত। ফুল চাষিরা জানান, এই গোলাপ গ্রাম থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ফুল সরবরাহ হয়। ফুল চাষি এখলাস বলেন, ‘এখানে গোলাপ ছাড়াও জারবেরা, গ্লাডিওলাসেরও চাষ হয়। ৩০০টি গোলাপের দাম ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাগান মালিকরা জানান, সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ৭০০ থেকে ৮০০ হেক্টর জমিতে গোলাপ ফুলের চাষ হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় বিরুলিয়া, মোস্তাপাড়া, সামাইল ও শ্যামপুর এলাকায়। প্রায় চার শতাধিক চাষি বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করেন।
ফুল বিক্রেতা আবু কাওছার বলেন, ‘১৩ ফেব্রুয়ারি, পয়লা ফাল্গুন উপলক্ষে ফুল বিক্রি বেড়েছে। করোনাভাইরাসের প্রভাব কমছে। এ কারণে ফুলের চাহিদাও বেড়েছে।’
ব্যস্ততা বেড়েছে, জমেছে ফুলের ব্যবসা
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পয়লা ফাল্গুন উপলক্ষে গোলাপ গ্রাম জমে উঠেছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুল চাষি ও বিক্রেতারা। ফুলের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। তাই বাড়তি ফুলের চাহিদা মেটাতে বিরুলিয়ার প্রতিটি গোলাপ বাগানেই নেওয়া হচ্ছে বাড়তি পরিচর্যা। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বাগান পরিচর্যাকারীরা।
বাগান মালিকরা জানান, এবার প্রায় ৮০০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে।
গোলাপ গ্রাম যাওয়ার সেরা সময় এখনই
গ্রামের বুক চিরে চলে গেছে আঁকাবাঁকা সরু পথ। দুই পাশে বিস্তীর্ণ গোলাপের বাগান। ফুটে আছে টকটকে লাল গোলাপ। সকালের শিশির ভেজা গোলাপে নরম আলোর ঝিকিমিকি। গ্রামজুড়ে ফুলের সৌরভ। সবমিলিয়ে মুগ্ধ হওয়ার মতো একটি জায়গা। নগরের ইট কাঠ আর পাথরের যান্ত্রিক জীবন থেকে ছুটি নিয়ে একদিনের জন্য যেতে পারেন এই গ্রামে। চোখ জুড়ানো দৃশ্য নিয়ে সেজে আছে পুরো গ্রাম। যেদিকে চোখ যায় গোলাপের ক্ষেত। গোলাপের নয়নাভিরাম দৃশ্য ও মনমুগ্ধকর সুবাস গ্রাস করবে আপনাকে।
গোলাপের সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই দল বেঁধে চলে আসেন সাদুল্লাহপুরে। গ্রামটিতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সবচেয়ে ভালো সময় এখনই। চাইলে সারা দিন ফুলের রাজ্যে কাটিয়ে দিতে পারেন। অনেকগুলো ফুলও কিনে আনতে পারবেন।
যেভাবে যাবেন
মিরপুর-১ থেকে দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাটে যেতে হবে। এখান থেকে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত বিভিন্ন নৌকা সাদুল্লাপুর যায়। এরপর অটোরিকশায় জনপ্রতি ভাড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা। অথবা মিরপুর-১ থেকে আলিফ কিংবা মোহনা বাসে উঠে সরাসরি বিরুলিয়া ব্রিজ যেতে পারেন। অথবা মিরপুর-১ এর কাছেই অবস্থিত দিয়াবাড়ি থেকে মিনিবাসে চড়তে পারেন।
বেড়িবাঁধের হাইওয়ে ধরে বেশ কিছুক্ষণ এগোলেই বিরুলিয়া সেতু পড়বে। বিরুলিয়া পৌঁছালে আপনাকে পায়ে হেঁটে জমিদার বাড়িগুলো ঘুরে দেখতে হবে। আর গোলাপগ্রামে যেতে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে আক্রাইন বাজার। আক্রাইন বাজার থেকে অটোতে সাদুল্লাহপুর।
সাইফ/ইভা