ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি, কোরবানিতে বাড়তি সতর্কতা জরুরি’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ১৭ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৭:৪২, ১৭ জুলাই ২০২১
‘করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি, কোরবানিতে বাড়তি সতর্কতা জরুরি’

মহামারি করোনার সংক্রমণ এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তাই এবারের কোরবানিতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশবিশেষজ্ঞরা।

শনিবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ‘করোনা মহামারিতে কোরবানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষক’ আলোচনা সভায় বক্তারা এই কথা বলেন। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং সাদাকাহ ফাউন্ডেশন অব ইউএসএ যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আরো পড়ুন:

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন অব ইউএসএ-এর প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পবা'র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার নর্থ সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএচডি ফেলো আব্দুস সালাম ভূঁইয়া, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা.লেলিন চৌধুরী এবং বিশিষ্ট ইসলামিক ব্যক্তিত্ব সাদিকুর রহমান আজহারী ও পবার সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ।

সভায় আব্দুস সালাম ভূঁইয়া বলেন, করোনার সংক্রমণ এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তাই এবারের কোরবানিতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। যেটা আমার সবসময় বলে থাকি, যত্রতত্র নয়, একটা নির্দিষ্ট জায়গায় পশু জবাই করতে হবে। গ্রামে-গঞ্জে যেখানে সেখানে কোরবানি করা হয়, যা পরবর্তীতে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে মানুষের জীবন যেমন দূর্বিষহ করে তোলে, তেমনি পরিবেশও নষ্ট হয়। আমি মনে করি, এজন্য স্লটারিং হাউসের ব্যবস্থা করতে হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, পশু কেনার সময় ১৮ বছরের কম এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের হাটে যাওয়া মোটেও ঠিক হবে না। যারা টিকা নিয়েছেন তারা হাটে যাবেন এবং পশু স্পর্শ করার পর সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। পশুর ক্রেতা এবং বিক্রেতা- উভয়কেই মাস্ক পরিধান করতে হবে। অবশ্যই নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। কোরবানির পর জায়গাটা পরিষ্কার করতে হবে এবং বর্জ্যগুলো নির্দিষ্ট গর্তে ফেলে মুখ বন্ধ করে দিতে হবে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি অবশ্যই কোরবানির পশুর সংস্পর্শে আসবেন না।

আবু নাসের খান বলেন, কোরবানির প্রতিটি বর্জ্যকেই কাজে লাগিয়ে তা সম্পদে রুপান্তরিত করা সম্ভব। পশুর চামড়া, হাড়, শিং, পাকস্থলী, মূত্রথলি, রক্ত, গোরব, পশুর উচ্ছিষ্ট, নাড়িভুড়িসহ অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আলাদা ভাবে সংরক্ষণ করে বিদেশে রপ্তানি করে কোটি কোটি টাকা আয় করা যায়। রক্তসহ অন্যান্য বর্জ্য পরিষ্কার করতে অনেকে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, এটা পরিহার করতে হবে। গোবর আলাদা স্থানে সংরক্ষণ করে সেটা দিয়ে সার বানানো যায় এবং বিভিন্ন নার্সারি, ছাদ বাগানে, বাসার নিচের বাগানে ব্যবহার করা যায়। ঢাকার ক্ষেত্রে সবাইকে স্লটারিং হাউসগুলো ব্যবহার করতে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

আলোচকদের বক্তব্যে কিছু সুপারিশ উঠে এসেছে। সেগুলো হলো-:

১) করোনা মহামারিকালে সুস্থ পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় নিয়ে সুনির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশু জবাই করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা।

২) বর্জ্যগুলো আলাদাভাবে প্যাকেটে তুলে ভালোভাবে মুখ বন্ধ করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা কিংবা মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে সচেতনতা সৃষ্টি।

৩) সঠিক ও সুষ্ঠু নিয়মে পশু কোরবানি দেওয়ার জন্য জনগণকে প্রশিক্ষিত করা।

৪) পশুর হাড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করার জন্য ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা এবং আর্থিক প্রনোদনা প্রদান করা, যাতে একদিকে পরিবেশ উন্নত হয়, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়।

৫) পশুর হাটের গোবর, উচ্ছিষ্ট, গো-খাদ্য, পাকস্থলীর হজমকৃত বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে রাখা এবং জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা।

৬) পর্যাপ্ত স্লাটারিং হাউসের ব্যবস্থা করা এবং এটি ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা।

ঢাকা/হাসান/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়