ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ বাড়ছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১  
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ বাড়ছে

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে আগামী ৬ বছরে মোট ৪.৫ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমেটেড (বিসিএমসিএল)। এজন্য কর্মরত চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চতুর্থ মেয়াদে চার বছরের চুক্তি করতে যাচ্ছে সংস্থাটি।

সূত্র জানায়, কাজটির জন্য চীনা সংস্থাকে দিতে হবে ১ হাজার ৪৯ কোটি ৪৮ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। বিসিএমসিএল‘র নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ভূগর্ভস্থ সড়কপথ নির্মাণ, কয়লা উত্তোলন, অপারেশন, খনির রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কাজ করা হবে।

সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি বিশেষ আইন,২০১০ (২০১৮ সালের সর্বশেষ সংশোধনসহ)’ এর আওতায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড এবং চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের চার বছর মেয়াদী তৃতীয় চুক্তির মেয়াদ ২০২১ সালের ১০ আগস্ট শেষ হয়েছে। চুক্তির মেয়াদ শেষে প্রক্রিয়াধীন নতুন চুক্তির অধীনে খনির উত্তর ও দক্ষিণাংশ থেকে কয়লা উত্তালনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জন টি বয়েড কোম্পানি সম্ভাব্যতা যাচাই করে। এতে দেখা যায়, প্রথম দুই বছরে সেন্ট্রাল পার্ট থেকে ১.৩ মিলিয়ন টন এবং ৫ হাজার ৮০০ মিটার নতুন রোডওয়ে নির্মাণ সাপেক্ষে নর্দার্ন পার্ট থেকে পরবর্তী  বছরে ৩.২ মিলিয়ন টনসহ পরবর্তী ৬ বছরে মোট ৪.৫ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা যাবে।

বড়পুকুরিয়া খনি থেকে নিরবচ্ছিন্ন কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যে চলমান তৃতীয় চুক্তির মেয়াদ শেষে পরবর্তী ৬ বছরের জন্য একটি নতুন চুক্তির মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের জন্য এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের দেওয়া সংশোধিত প্রস্তাবনা, খনির অপরাপর কারিগরি ও আর্থিক বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে কমিটির মাধ্যমে প্রাক্কলনসহ খসড়া আন্তর্জাতিক দরপত্র দলিল প্রস্তুত করা হয়। কারগিরি ও আর্থিক বিষয়াদি নিবেচনায় নিয়ে প্রস্তুতকৃত প্রাক্কলনসহ খসড়া আন্তর্জাতিক দলিল ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিসিএমসিএলের ৩১৪তম পর্ষদ সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়।

এর পর বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চলমান বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কয়লার উৎপাদন গ্যাপ পরিহার করে নিরবচ্ছিন্ন কয়লা উৎপাদন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন,২০১০ এর আওতায় দক্ষ, যোগ্য ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ঠিকাদার নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

করোনা পরিস্থিতিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে আন্তর্জাতিক দরদাতাদের পক্ষে দরপত্রে অংশগ্রহণের জন্য সাইট ভিজিট, জনবল ও মালামাল মবিলাইজেশন অত্যন্ত জটিল, সময়সাপেক্ষ ও সমস্যাসংকুল হতে পারে, এ বিবেচনায় নতুন চুক্তি স্বাক্ষরে বিলম্ব কিংবা চুক্তি স্বাক্ষরের পর শুরুতেই ৬-১০ মাসের একটি উৎপাদন গ্যাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হয়। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রচলিত পদ্ধতিতে ঠিকাদার নিয়োগে এবং দরপত্র প্রক্রিয়ায় নানা প্রতিকূলতা ও দীর্ঘসূত্রতার আশঙ্কা অনুভূত হয়। এ পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে বিশেষ বিধানের প্রযোজ্য পদ্ধতি অনুসরণ করে বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অথবা এর কাছাকাছি সময়ের মধ্যে কয়লা খনির নর্দার্ন পার্টের ভূগর্ভস্থ রোডওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করাসহ স্বল্প সময়ে কয়লা উৎপাদন শুরু করতে কর্মরত চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে কয়লা উত্তোলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়