ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

২০২২ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে ১.২২ শতাংশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ১৪ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৯:৪৮, ১৪ নভেম্বর ২০২২
২০২২ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে ১.২২ শতাংশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশ ২০২২ সালে বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.২২ শতাংশ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। শিশুমৃত্যু হার প্রতি ১ হাজার জীবিত জন্মে ২০০৯ সালে ২৮ জন থেকে হ্রাস পেয়ে এখন ১৫ জনে নেমে এসেছে। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমানে প্রায় ৫০ ভাগ শিশু মৃত্যুহার কমাতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ ধারা অব্যাহত রাখতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) থাইল্যান্ডের পাতায়া এক্সিভিশন অ্যান্ড কনভেনশন হলে পার্টনার্স ইন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশসহ ২৭টি দেশের মন্ত্রী ও প্রতিনিধি পর্যায়ের জনসংখ্যা ও উন্নয়ন বিষয়ক ১৯তম আন্তর্জাতিক আন্তঃসরকার পর্যায়ের বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

সভায় জিম্বাবুয়ের উপ-রাষ্ট্রপতি ড. সি শিওয়েঙ্গা, ভারতের মিনিস্ট্রি অব হেলথ অ্যান্ড ওয়েলফেয়ারের ফ্যামিলি প্ল্যানি অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ ডিভিশনের অ্যাডভাইজার ড. এস কে সিকদারসহ ২৭টি দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। 

সভায় পিপিডি’র ২৭টি দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের ও প্রতিনিধি পর্যায়ের নেতৃরা নিজ নিজ দেশের প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন, শিশু মৃত্যুর হার ও মাতৃ মৃত্যুর হার কমানো, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা, শিশুশ্রম বন্ধ করা, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের স্বাস্থ্যহানিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় উপস্থিত প্রতিনিধিরা এসব বিষয়ে একমত পোষণ করে বক্তব্য রাখেন। তারা নিজ নিজ দেশের স্বাস্থ্য প্রজনন সেবার উন্নয়নচিত্র ও সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। সভায় উপস্থিত এক দেশ অন্য দেশের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নিজ দেশে কাজে লাগাবেন বলে জানান।

এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মন্ত্রী জাহিদ মালেক বাংলাদেশের মাতৃস্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, করোনা পরিস্থিতি, বিনামূল্যে হাসপাতাল সেবা কার্যক্রমসহ স্বাস্থ্য খাত নিয়ে সরকারের নানা উদ্যোগগুলো তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৬৪ ভাগ নারী  (১৫-৪৯ বছর বয়সী) গর্ভনিরোধ পদ্ধতি সেবা সরকারিভাবে বিনামূল্যে পাচ্ছে। মাতৃ মৃত্যুর হার ২০০৯ সালে প্রতি লাখে ২৫৯ জন থেকে কমিয়ে এখন ১৬৩ জন হয়েছে। শিশুদের সময় মতো টিকা প্রদান করে বাংলাদেশ বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্যাভী কর্তৃক ভ্যাক্সিন হিরো পুরস্কার পেয়েছেন। স্বাস্থ্য প্রজনন সেবার উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে জাতিসংঘের এমডিজি পুরস্কার, ২০১১ সালে ডিজিটাল হেলথ ফর ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট নামে সাউথ-সাউথ পুরস্কার পাওয়াসহ নানা পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন। করোনা মোকাবিলা করে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ বিশ্বের ৫ম স্থান এবং দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এই অর্জনগুলো সম্ভব হয়েছে কিছু সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে গঠন মূলক কাজ করার মাধ্যমে। বাংলাদেশের এই সফলতা অন্যদেরও যেমন কাজে লাগবে, তেমনি অন্য দেশের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নমূলক কাজগুলো বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবাতেও কাজে লাগবে। এভাবে একটি দেশের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন থেকে গোটা বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি করতে সকলকে একযোগে এক হয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দরিদ্র পীড়িত দেশগুলোর অর্থনৈতিক ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেন। যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় ক্ষতি হচ্ছে। বিশ্বে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে এবং এর ফলে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এগুলো নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সবাইকে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ২৭টি দেশের আন্তর্জাতিক সংগঠন পিপিডি এর প্রধান কার্যালয়টি বর্তমানে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে স্থায়ীভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এটি বাংলাদেশে নির্মাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেনিয়ার নাইরোবি সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে উদ্যোগ নেন এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান মন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপিপিপিডি কার্যালয়টির কার্যক্রম বাংলাদেশে শুরু করতে কার্যকর ভূমিকা রাখেন।

মেয়া/এনএইচ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়