ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শ্যামপুরে অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম উদ্বোধন 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০২, ৪ জুন ২০২৩  
শ্যামপুরে অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম উদ্বোধন 

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় পুরান ঢাকার শ্যামপুরে অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম উদ্বোধন করা হয়েছে।

রোববার (৪ জুন) শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ গুদাম উদ্বোধন করেন। এ সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, প্রকল্পের ঠিকাদার নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মো. আব্দুল্লাহ আল মাকসুস এবং বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, নিমতলী ও চুরিহাট্টা ট্রাজিডির পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তায় এই রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। অস্থায়ীভাবে নির্মিত এই রাসায়নিক গুদাম শিগগির প্রকৃত ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দেওয়া হবে। টঙ্গীতেও এরকম একটি গুদাম নির্মিত হচ্ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, রাসায়নিক দ্রব্যাদি, বিস্ফোরক দ্রব্যের জন্য আলাদা গুদাম ঘরের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাতে পুরান ঢাকা থেকে এগুলো স্থানান্তর করা হবে। আমি আশা করব, দ্রুত যেন এই নীতিমালাটি (পুরান ঢাকা রাসায়নিক দ্রব্যাদি স্থানান্তর নীতিমালা) প্রণয়ন করা হয়। এফবিসিসিআই, ঢাকা চেম্বারসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি যারা এখানে আছেন, তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটি নীতিমালা করে দ্রুত স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হবে। এ নীতিমালা করতে যেন আবার কয়েক বছর লেগে না যায়, সেজন্য আমি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবকে অনুরোধ করব। একটি সুনির্দিষ্ট সময়, যেমন: ১৫ দিন বা এক মাসের মধ্যে যেন এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় এবং নীতিমালাটি যেন ব্যবসাবান্ধব হয়। যারা এখানে গুদামে আসবেন, তাদের কিন্তু আবারও বিনিয়োগ করতে হবে। তারা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় তারা যেন উৎসাহিত বোধ করে, স্বাচ্ছন্দ বোধ করে, কিছু ছাড় দিয়ে হলেও সেভাবে যেন নীতিমালাটি করা হয়। 

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে দেশকে আবারও পেছনের দিকে নিয়ে যেতে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধীদের নানামুখী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। তাই, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতাবিরোধীদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যহত রাখতে হবে।

‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম’ প্রকল্পটি ২০১৯ সালের মার্চে শুরু হয়। সম্প্রতি এ গুদামের নির্মাণকাজ শেষ হয়। এতে প্রাক্কলিত ব্যয় ৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা হলেও প্রকৃত ব্যয় হয়েছে ৬২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি তথা সরকারি অনুদান ৫৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা এবং বিসিআইসি দিয়েছে ৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এতে সরকারের প্রায় ৯ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। ৬.১৭ একর জমির ওপর নির্মিত এ প্রকল্পটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ৩৫´×৩৫´×২০´ আকারের ৫৪টি গুদাম ও ৭২´×৩৬´ আকারে তিনতলা বিশিষ্ট দুটি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পুরান ঢাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা রাসায়নিক কারখানা ও গুদাম একটি নিরাপদ জায়গায় দ্রুততম সময়ে স্থানান্তরের লক্ষ্যে ‘উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরি লিমিটেড’ শ্যামপুর, ঢাকার স্থলে ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি জরুরি ভিত্তিতে সরকার হাতে নেয়। এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভুক্ত প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। 

আসাদ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়