ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘যারা ইন্ডিয়া আউট বলছে, তারাই জনগণ থেকে আউট হয়ে গেছে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০০, ২৭ মার্চ ২০২৪  
‘যারা ইন্ডিয়া আউট বলছে, তারাই জনগণ থেকে আউট হয়ে গেছে’

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, স্বাধীনতার এই মাসেও আমরা দেখছি আবারও পানি ঘোলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারত সরকার, ভারতবাসী মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের যেভাবে সহায়তা করেছে, আমরা যদি সেটা ভুলে যাই, তাহলে আমরা কী ধরনের মানুষ হলাম। যারা ভারতবিরোধী স্লোগান দিচ্ছে, ইন্ডিয়া আউট বলছে তারা আজকে দেশের জনগণ থেকে আউট হয়ে গেছে। তারা পাকিস্তানপন্থী এবং পাকিস্তানের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর বিআইডব্লিউটিএ ভবনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

একাত্তরের পরাজয়ের পরিশোধ নেওয়া এবং একটি দেশকে হত্যা করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজ তারই রক্তের উত্তরাধিকার দেশরত্ন শেখ হাসিনা সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন। ৭৫ এর পরে অনেক পানি গড়িয়ে গেছে। আমরা যদি ৭৫ এর এবং মুক্তিযুদ্ধে সেই জায়গায় ফিরে যেতে চাই- হবে না। কারণ সমাজ অনেক বিশৃঙ্খলা হয়ে গেছে। শিক্ষায় বিশৃঙ্খলা হয়েছে, অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা হয়েছে। সবকিছুতে ভেজাল ঢুকে গেছে। এই ভেজালকে পরিশুদ্ধ করা কঠিন কাজ। এর মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’  

তিনি বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে সাধারণ করতে চায় তারা বাংলাদেশের উন্নয়নকে, দেশের এগিয়ে যাওয়াকে সহ্য করতে পারেন না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা কেন সোনার বাংলা হয়ে গেল, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা কেন পৃথিবীর একটি বিস্ময়কর জায়গায় চলে গেল, কেন পৃথিবীতে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হলো এটা তাদের বড় কষ্ট। তারা এই উন্নয়ন চায় না। দেশের উন্নয়ন এবং স্বাবলম্বী হওয়া তারা চায় না এজন্য বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার চেষ্টা করে।’

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই দেশটাকে স্বাধীন করেছিলেন, এই স্বাধীনতার জন্য অনেকেই সংগ্রাম করেছেন। কারো কথায় স্বাধীনতা আসেনি। এই বাংলার সম্পদ দিয়ে লন্ডন শহর তৈরি করা হয়েছে, এই বাংলার সম্পদ দিয়ে কলকাতা শহর তৈরি করা হয়েছে। এই বাংলার সম্পদ দিয়ে ইসলামাবাদ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এই দেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বঙ্গবন্ধু সেটা জানতেন এবং সেই পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। আমার সম্পদ দিয়ে আমার অধিকার তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। দেশের সম্পদ যারা লুণ্ঠন করেছিলেন এই লুণ্ঠনকারীরা আবারও এদেশকে বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে দিতে চাইবে না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কারও একার দেশ না এই দেশ ১৬ কোটি মানুষের দেশ। বঙ্গবন্ধু এই দেশটিকে আমাদেরকে উপহার দিয়েছিলেন। আমাদের দায়িত্ব হলো এই দেশটির মাথা উঁচু করে দাঁড় করানো। আত্মসম্মান নিয়ে দাঁড় করানো। ভিক্ষার থলি নিয়ে পৃথিবীর দাতাগোষ্ঠীর দ্বারে দ্বারে ঘুরব এটা কোনো মর্যাদার বিষয় নয়। আজকে পদ্মা সেতু আমাদের একটি মর্যাদার জায়গা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান যারা এই দেশে আসেন তারাই পদ্মা সেতু দেখতে চান। ভুটানের রাজা এসেছেন, তিনি যাচ্ছেন পদ্মা সেতু দেখতে। শেখ হাসিনা কী উন্নয়ন করেছেন এটা সমগ্র পৃথিবী জানতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য বড় একটি অহংকারের বিষয় যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ তৈরি হয়েছিল। আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের হিমালয়ের কাছে নিয়ে গেছেন এটা আমাদের বড় প্রাপ্তি। স্বাধীনতা দিবসে এটাকে ধরে রাখা আমাদের বড় দায়িত্ব।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহিদ সদস্যদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম এবং বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মো. শরীফ উদ্দিন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

আসাদ/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়