ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

শেষ সময়ে দম ফেলার ফুরসত নেই কামারপাড়ায়

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫০, ৬ জুন ২০২৫  
শেষ সময়ে দম ফেলার ফুরসত নেই কামারপাড়ায়

ঈদকে কেন্দ্র করে হাটগুলোতে বিক্রি হচ্ছে পশু। সেইসঙ্গে কোরবানির মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জামের কদর বেড়েছে। তাই কামারদেরও ব্যস্ততা বেড়েছে। কামারপাড়ায় কয়লার চুলায় জ্বলছে দাউ দাউ করে আগুন ও টুংটাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠছে। শেষ সময়ে পশু কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় দা, ছুরি, বঁটি, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধরাল সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত কামাররা। এসব পণ্য কিনতে কামারের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে।

স্থায়ী কামারের দোকানের পাশাপাশি বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বসেছে অস্থায়ী দোকান। দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দা, বটি, ছুরি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধরাল সরঞ্জাম।

আরো পড়ুন:

তবে আগের বছরের চেয়ে এ বছর দা, ছুরি, বঁটি, চাপাতির দাম কিছুটা বাড়তি। লোহার দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। তাই কেজি হিসাবে এসব জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে।

শুক্রবার (৬ জুন) রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী, মেরাদিয়া, খিলগাঁও, বাসাব, রামপুরা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিভিন্ন এলাকায় কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে কাকডাকা ভোর থেকে তারা দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি বানাতে কাজ চলছে। অন্য সময় সন্ধ্যা নাগাদ দোকান গুছিয়ে ঘরে ফিরলেও, এখন মধ্যরাত পার হয়ে গেলেও কাজ শেষ হয় না। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ব্যস্ততা বাড়ছে কামারের দোকানগুলোতে। প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি থাকে এ শিল্পের ব্যবসায়ীদের। ঈদের শেষ দিন ও রাতে কোরবানির পশু বেশি কেনা-বেচা হয়। ফলে ওই দিন রাতেই দা, বটি, ছুরি, চাপাতি কিনতে ভিড় জমে। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এক-দুই সপ্তাহে যে পরিমাণ বেচা-বিক্রি হয়, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বিক্রি হয় ঈদের আগের দিন রাতে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পশু জবাইয়ের ছুরি আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। এছাড়া, চামড়া ছাড়ানোর ছোট-মাঝারি ছুরি বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকায়। চাকু আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। ওজন অনুযায়ী ভালো মানের বটি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। আর ওজন অনুযায়ী চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ২০০০ টাকায়।

এদিকে, কোরবানির পশুর মাংস কাটার অনুষঙ্গ হিসেবে আকারভেদে প্রতি পিস হোগলার চাটাই ২০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং আকারভেদে খাটিয়া ৩০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু কিছু পণ্য গত বছরের তুলনায় একটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী মেরাদিয়া এলাকায় স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ কামারের দোকান বসেছে। দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধরালো সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত দোকানের কর্মীরা। বটি ও চাপাতির দাম জানতে চাইলে দোকানের কর্মচারী সানোয়ার বলেন, “ওজন অনুযায়ী ভালো মানের বটি ও চাপাতি ৮০০ থেকে ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার দাম সামান্য বাড়তি রয়েছে।”

দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার প্রধান সড়কে ভ্রাম্যমাণ কামারের দোকান বসিয়েছেন বিশ্বনাথ দে। প্রতি বছরে ঈদের আগে তিনি ধারাল সরঞ্জামের অস্থায়ী দোকান দেন। তিনি বলেন, “কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর এখানে কাজ করি। ঈদের আগের এক সপ্তাহ ভালো বেচা-বিক্রি হয়। দামও ভালো পাওয়া যায়। তবে ঈদের অগের দিন ও রাতে ভালো কেনাবেচা হয়।”

বনশ্রী এলাকা থেকে মেরাদিয়ায় চাপাতি ও ছুরি কিনতে কামারের দোকানে এসেছেন রায়হান হোসেন। তিনি বলেন, “এবার মাংস কাটা ও চামড়া ছড়ানোর সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি। ঈদের কারণে বাধ্য হয়ে বেশি দামে সরঞ্জাম কিনতে হচ্ছে।”

ঢাকা/এনটি/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়