ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পুলিশ কর্মকর্তা নিহার রঞ্জন বিষয়ে যা বল‌ল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪০, ২৭ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৬:৫০, ২৭ আগস্ট ২০২৫
পুলিশ কর্মকর্তা নিহার রঞ্জন বিষয়ে যা বল‌ল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

পুলিশ কর্মকর্তা নিহার রঞ্জন হাওলাদারের বিষয়ে‌ বি‌ভিন্ন গণমাধ‌মে প্রকা‌শিত সংবা‌দের প্রতিবাদ জা‌নি‌য়ে‌ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসব সংবাদ অসত্য ও বিভ্রান্তিকর ব‌লে দা‌বি ক‌রে‌ছে মন্ত্রণালয়।

বুধবার (২৭ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবাদ বিজ্ঞ‌প্তি‌তে জানায়, বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে বলা হয়েছে, ‘প্রায় সাত লাখ টাকার ধার পরিশোধ না করায় পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে নিহার রঞ্জন হাওলাদার নামে এক পুলিশ কর্মকর্তার। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এসপি ছিলেন তিনি। শাস্তির অংশ হিসেবে তার এ পদ কেড়ে নিয়ে তাকে অতিরিক্ত এসপি করা হয়েছে।’ কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে—ধার পরিশোধ না করায় তার পদ অবনমন করা হয়নি বা পদ কেড়ে নেওয়া হয়নি। চাকরি জীবনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অপরাধে নিহার রঞ্জন হাওলাদারের নামে তিনটি বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয় এবং সেসব মামলায় তিনি অভিযুক্ত হন। যার একটি হচ্ছে ধার পরিশোধ না করা, যেটিতে যথাযথ বিধি প্রতিপালনপূর্বক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালার ৩(খ) বিধি অনুসারে অসদাচরণের অভিযোগে একই বিধিমালার ৪(২)-এর উপবিধি (১) (ক) অনুসারে তাকে তিরস্কার দণ্ড প্রদান করা হয়। গত ২১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে ২৪০ নম্বর স্মারকমূলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তিরস্কার দণ্ড প্রদান করা হয়।

নিহার রঞ্জন হাওলাদারকে গত ২২ জুন, ২০২৩ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের তৎকালীন সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তিন বছরের জন্য ‘নিম্ন পদে অবনমিতকরণ‘ গুরুদণ্ড প্রদান করা হয়। এর কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, ‘নিহার রঞ্জন হাওলাদার (বিপি-৭১০১১১৬৪৪১), পুলিশ সুপার, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ও সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার, সিআইডি, ঢাকা ইতোপূর্বে বিশেষ পুলিশ সুপার, সিআইডি, ঢাকা হিসাবে কর্মরত থাকাকালে তার বিরুদ্ধে ক‌লি সিকদার না‌মের এক গৃ‌হিণীর স‌ঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার কারণে তার ‌(নিহার রঞ্জন) স্ত্রী মিতা সরকার যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হলে গত ১১-১১-২০১০ তারিখে তিনি তার স্ত্রী মিতা সরকারের সাথে ১৫০ টাকা স্ট্যাম্পে সদাচরণের অঙ্গীকার করলে বিভাগীয় মামলা প্রত্যাহার করা হয়। পরবর্তীতে তিনি উক্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে পুনরায় অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), ঢাকার পুলিশ পরিদর্শক কনিকা দাশের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক স্থাপন করা ও পরবর্তীতে তার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কর্মস্থলের বাইরে অবস্থান করা এবং মিথ্যা ভ্রমণ বিবরণী সিআইডি সদর দপ্তরে দাখিল করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। উক্ত বিভাগীয় মামলায় যথাযথ বিধি প্রতিপালনপূর্বক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে একই বিধিমালার ৪(৩) এর উপ-বিধি (১) (ক) অনুসারে গত ২২-০৬-২০২৩ তারিখের ১৩১ নম্বর স্মারকমূলে তাকে তিন বছরের জন্য নিম্নপদে অবনমিতকরণ গুরুদণ্ড দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ বেদখলীয় জমি দখল করে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি ইত্যাদি কারণে নিহার রঞ্জন হাওলাদারের বিরুদ্ধে অপর একটি (তৃতীয়) বিভাগীয় মামলায় অভিযোগ তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হওয়ায় গত ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর তারিখের ২১৭ নম্বর স্মারকমূলে তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(২) এর উপ-বিধি (১) (ঘ) অনুযায়ী তাকে এক বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণের দণ্ড দেওয়া হয় এবং ভবিষ্যতে এ বেতন সমন্বয় করা হবে না মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়