প্রধান উপদেষ্টার হাতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ হস্তান্তর করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে প্রস্তুত করা সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের প্রতিনিধিরা এ সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানিয়ে বলেন, “আজ দুপুর ২টায় ঢাকার বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ জাতীয় ঐকমত্য কমিটির সদস্যরা বক্তব্য রাখবেন।”
গতকাল বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে কমিশনের সমাপনী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাপনী বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের পর থেকে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রদান পর্যন্ত সমস্ত ডকুমেন্ট, আলোচনার ভিডিও, অডিও ও ছবি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “এগুলো মহামূল্যবান সম্পদ। জাতি হিসেবে আমরা কোন প্রেক্ষাপটে কী প্রক্রিয়ায় কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছালাম, তা সকলের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং উন্মুক্ত থাকা দরকার। যত বৈঠক হয়েছে সেগুলোর ছবি ও ভিডিও, যত চিঠি চালাচালি হয়েছে সমস্ত ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করতে হবে এবং ক্যাটাগরি করে রাখতে হবে। টেলিভিশনে যেসব আলোচনা লাইভ প্রচার হয়েছে, সেগুলো খণ্ড খণ্ড আকারে সংরক্ষণ করতে হবে। কারণ, এগুলো হবে ইতিহাসের চিরজীবন্ত দলিল। যারা গবেষণা করতে চায়, তারা যেন এগুলো দেখে কাজে লাগাতে পারে। প্রজন্মের পর প্রজন্মে এই ডকুমেন্ট থেকে যাবে। এই দলিলগুলোই ভবিষ্যতের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।”
সমাপনী বৈঠকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা চূড়ান্ত করার পাশাপাশি অন্য সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নেও সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কমিশন সদস্যরা।
কমিশন-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সনদের মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হলেও, সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন কাঠামো নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। আইনি ভিত্তির প্রশ্নে সব দল গণভোটে একমত হলেও, গণভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে অভিন্ন মত পাওয়া যায়নি।
কমিশনের এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া ৩০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৫টি দল স্বাক্ষর করেছে, তবে ৫টি দল আপাতত স্বাক্ষর করেনি। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত ছাত্র-তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জানিয়েছে, আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত তারা সনদে স্বাক্ষর করবে না।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দীর্ঘ আলোচনার পর রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের মতামতের ভিত্তিতে ‘জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫’ প্রণয়ন করা হয়।
ঢাকা/এএএম/ইভা