ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘মানবিক’ প্রচারণা চালাতে শেখ হাসিনার কোটি ডলারের পিআর: প্রেস সচিব

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১২, ১১ নভেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৩:২০, ১১ নভেম্বর ২০২৫
‘মানবিক’ প্রচারণা চালাতে শেখ হাসিনার কোটি ডলারের পিআর: প্রেস সচিব

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক প্রচারণা চালাতে কোটি ডলারের পিআর ও অভিজাত আইনজীবী ব্যবহার করছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ভারতীয় সহযোগীদের মাধ্যমে আগামী কয়েক সপ্তাহে হাসিনার আরো কিছু “ইমেইল সাক্ষাৎকার” প্রকাশিত হবে বলেও তিনি জানান। 

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে ফেসবুক পোস্টে প্রেস সচিব এসব কথা লেখেন। 

তিনি বলেন, “নিজের জনগণের ওপর হত্যাযজ্ঞের পর, ইদি আমিন ১৯৭৯ সালে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ২০০৩ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই নীরবে বসবাস করেন। নির্বাসনে থাকাকালীন তিনি কোনো সাক্ষাৎকার দেননি এবং খুব কম সময়ই নিজের বাসভবন থেকে বের হতেন। এর কারণ তিনি ছিলেন নিঃস্ব এক সাবেক স্বৈরশাসক। নির্বাসিত, ক্ষমতাহীন ও টাকা-পয়সা না থাকা একজন গণহত্যাকারীর সাক্ষাৎকার নিতে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমেরও কোনো আগ্রহ ছিল না।”

“শেখ হাসিনার হাতেও রক্ত লেগে আছে। তিনি হাজারো মানুষকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন, প্রায় ৪,০০০ মানুষকে গুম করেছেন এবং তার ঘনিষ্ঠদের সহায়তায় ব্যাংক লুটপাটে তদারকি করেছেন। ইদি আমিনের মতো তিনিও শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তবে তার ক্ষেত্রে গন্তব্য ছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু আমিনের মতো হাসিনা নির্বাসনে থেকে নীরবতা পালন করছেন না। পার্থক্যটা কীসের? টাকার। হাসিনার কাছে টাকার কোনো অভাব নাই— যা দিয়ে তিনি বৈশ্বিক প্রচারণা চালাতে এবং অভিজাত আইনজীবী দলগুলোকে অর্থায়ন করতে পারছেন। তার সহযোগীরা বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ল’ ফার্মগুলোর একটি ভাড়া করেছে আর তার পিআর এজেন্সিগুলো একের পর এক সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করেছে, যা সুবিধামতো ইমেইলের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি। 

হাসিনা নিজের বর্ণনাকে টিকিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছেন উল্লেখ করে  তিনি লেখেন, “পশ্চিমা সাংবাদিকরা এবং তাদের ভারতীয় চাটুকার সহযোগীরাও নিশ্চিত নন যে সেই উত্তরগুলো সত্যিই হাসিনার কাছ থেকে আসছে নাকি তাঁর জনসংযোগ কর্মকর্তাদের লিখে দেওয়া! তবুও তারা এই তথাকথিত “ইমেইল সাক্ষাৎকার” প্রকাশ করে চলেছে, হাসিনার নিজের বর্ণনাকে টিকিয়ে রাখতে ব্যয় করা কোটি টাকার সৌজন্যে।” 

এটা পুরাতন কৌশল জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা কোনো নতুন কৌশল না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক প্রধান ডোমিনিক স্ট্রস-কান নিউইয়র্কের একটি হোটেলে এক নারীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করার পরও কারাবরণ করেননি। কারণ তিনি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ল’ ফার্মে বিপুল অর্থ ঢেলেছিলেন। গণহত্যাকারী ও দুর্নীতিগ্রস্ত অভিজাতদের জন্য পিআর এজেন্সি ও আইনজীবীরা একটা ইলুশন তৈরি করে দেন যাতে তাকে “নির্দোষ” দেখানো যায়। তারা আইনি পরিভাষা আর পরিপাটি বিবৃতির মাধ্যমে জনগণের ক্ষোভকে কমানোর চেষ্টা করেন। চিলির স্বৈরশাসক পিনোশেও ইউরোপে পালিয়ে গিয়ে একই ধরনের সুবিধা নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, তিনিও ন্যায়বিচার থেকে রেহাই পাননি।”

হাসিনার আরো কিছু ‘ইমেইল সাক্ষাৎকার’ প্রকাশিত হবে জানিয়ে তিনি লেখেন, “তিনি আগামী কয়েক সপ্তাহে হাসিনার আরো কিছু ‘ইমেইল সাক্ষাৎকার’ প্রকাশিত হবে, যা প্রবল উৎসাহে ছড়িয়ে দেবে পশ্চিমা গণমাধ্যম ও ভারতীয় সহযোগীরা। এর কোনোটাই গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নাই। এসবে যা লেখা থাকবে তার সবটাই মিথ্যা, কোনো অনুশোচনাও থাকবে না। এগুলো কোটি ডলারের পিআর এজেন্সির ফসল, যার উদ্দেশ্য হলো এক গণহত্যাকারীকে মানবিক রূপে উপস্থাপন করা।”

ঢাকা/ইভা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়